নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
মতলব উত্তর উপজেলার ছেংগারচর বাজারে সুস্বাদু ও দেশখ্যাত দিনাজপুরের লিচুর বাজার জমে উঠেছে। ক্রেতা-বিক্রেতাদের হাঁকডাকে সরগরম হয়ে উঠেছে উপজেলার ছেংগারচর বাজারসহ বিভিন্ন হাট-বাজার। রসালো ও সুস্বাদু এই লিচু আকৃষ্ট করেছে ভোক্তাদের। তবে এ বছর লিচুর দাম নিয়ে কৃষক-ব্যবসায়ীদের মাঝে মিশ্র প্রতিক্রিয়া রয়েছে।
জ্যৈষ্ঠ মাসের মধু ফল হিসেবে পরিচিত দিনাজপুরের লিচু দেশব্যাপী খ্যাত। এই জেলার লিচুর মধ্যে চায়না থ্রি, বেদেনা, বোম্বাই, মাদ্রাজি, কাঁঠালি উল্লেখযোগ্য।
সপ্তাহখানেক ধরে ছেংগারচর বাজারে দিনাজপুরের বোম্বাই, মাদ্রাজি ও বেদানা জাতের লিচু উঠতে শুরু করেছে। বাজারে লাল রঙেরর থোকা থোকা লিচু নজর কাড়ছে সবার। সুমিষ্ট স্বাদের বোম্বাই, চায়না থ্র্রি, কাঁঠালি ও হাড়িয়া জাতের লিচু কিছু কিছু আসতে শুরু করলেও পুরোদমে এখনো তেমন বাজারে আসতে শুরু করেনি।
বৃহস্পতিবার (২৫ মে) দুপুরে ছেংগারচর বাজার ঘুরে দেখা যায়, দিনাজপুরের বোম্বাই, মাদ্রাজি ও বেদানা জাতের লিচু উঠেছে বাজারে। তবে এবার দাম বেশ চড়া। প্রতি একশ বোম্বাই লিচু ৩২০ থেকে ৩৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
ছেংগারচর পৌরসভার কলাকান্দা গ্রাম থেকে থেকে আসা লিচু ব্যবসায়ী মো. ইকবাল জানান, রাজশাহীর দিনাজপুরের লিচুর চাহিদা বেশি। বোম্বাই লিচুর দাম গত সপ্তাহে কম ছিল; কিন্তু এই সপ্তাহে মোকামেই দাম বেশি। তিনি প্রতি ১০০ লিচু ৩২০ থেকে ৪০০ টাকায় বিক্রি করছেন। তার মতে, আগামী ১০ দিনের মধ্যে লিচুর দাম আরো বাড়তে পারে।
লিচু কিনতে আসা উপজেলার ৯নং দক্ষিণ ব্যাসদী মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক জেসমিন আক্তার জানান, লিচুর দাম মোটামুটি ভালো। তবে সবচেয়ে বড় কথা, এবার লিচুতে ভেজাল পায়নি প্রশাসন।
লিচু ব্যবসায়ী নুরুজ্জামান জানান, খরার কবলে পড়ে এবারে লিচুর দানা ছোট হয়েছে। পাশাপাশি লিচুতে দেখা দিয়েছিল পচা ও ফেটে যাওয়া রোগ। তবে দাম মোটামুটি ভালোই দাম পাচ্ছেন।
তিনি বলেন, বোম্বাই জাতের লিচু প্রতি ১০০টি ২৫০ থেকে ২৮০ টাকা এবং মাদ্রাজি লিচু ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকায় দরে বিক্রি করছি।
উপজেলার আদুরভিটি এলাকা থেকে আসা লিচু ব্যবসায়ী মো. মোস্তফা জানান, এবার রংপুর, নওগাঁ, পাবনা ও নাটোরেও লিচু আবাদ হয়েছে। ফলে দাম কিছুটা কম। তবে দিনাজপুরের লিচুর চাহিদা বেশি।
এদিকে লিচুচাষীরা জানান, গত বছরের তুলনায় এবার দাম অনেক কম। উল্টো কথা বলছেন ব্যবসায়ী ও আড়তদাররা। তাদের মতে, লিচুর আকার ও গুণগত দিক দিয়ে এবারে দাম বেশি।
কৃষিবিদদের জানান, প্রচণ্ড খরার কারণে এবারে লিচু ছোট হওয়ায় দাম কম, তাছাড়া এবারের লিচুতে মোটাতাজাকরণ ওষুধ তেমন ব্যবহার করা হয়নি বলে দাবি করেন তারা।