শিরোনাম:
ফরিদগঞ্জ উপজেলা স্কাউট সম্পাদক দুর্নীতি ও অনিয়ম ধামাচাপা দিতে ঘুরছেন বিভিন্ন মহলের ধারে ধারে চাঁদপুরের ৮ উপজেলা সহ দেশের ৪৯৫ টি উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানকে অপসারন চাঁদপুর জেলার ৭টি সহ সারাদেশে ৩২৩ পৌরসভার মেয়র অপসারণ ফরিদগঞ্জে কুকুরের কামড়ে আহত ২০ কচুয়ায় মাদক মামলায় সাজাপ্রাপ্ত আসামী গ্রেপ্তার মেঘনায় কার্গোর ধাক্কায় তলা ফেটেছে সুন্দরবন -১৬ লঞ্চের, নারী নিখোঁজ ষোলঘর আদর্শ উবি’র ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি অ্যাডঃ হুমায়ূন কবির সুমন কচুয়ায় নবযোগদানকৃত প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারকে শিক্ষক সমিতি শুভেচ্ছা মতলব উত্তরে লেপ-তোশক তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছে কারিগররা উপাদী উত্তর ইউনিয়নে দীপু চৌধুরীর স্মরণে মিলাদ ও দোয়া

দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতিতে শাহরাস্তিতে ১৫ টি বেকারী বন্ধের উপক্রম

reporter / ১৭০ ভিউ
আপডেট : শনিবার, ২৮ মে, ২০২২

শাহরাস্তি প্রতিনিধিঃ পণ্য তৈরীর কাঁচামালের মূল্য দফায় দফায় বৃদ্ধি পাওয়ায় চাঁদপুরের শাহরাস্তি উপজেলায় বেকারীগুলো বন্ধের উপক্রম হয়েছে। লাগামহীন দাম বৃদ্ধির কারণে পণ্যের উৎপাদন খরচ ৪০ ভাগ বেড়ে গেছে। প্রতিটি পণ্যের উৎপাদন খরচ বাড়লেও আগের দামেই উৎপাদিত পণ্য বিক্রি করতে হচ্ছে। ফলে পণ্য বিক্রি করে বর্তমানে উৎপাদন খরচও উঠছে না। এতে করে পণ্য উৎপাদন করতে গিয়ে বড় অংকের লোকসান গুণতে হচ্ছে স্থানীয় বেকারী মালিকদের। ইতোমধ্যে লোকসানের মুখে ৩ থেকে ৪টি বেকারী বন্ধ হয়ে গেছে। আবার অনেক বেকারী মালিক লোকসান থেকে বাঁচতে শ্রমিক ছাটাই করছে। আবার অনেকে সপ্তাহে ২/৩ দিন নিজ প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখছে। গত মধ্য নভেম্বর থেকে পাইকারী পণ্যের বাজার মূল্য অস্থির হয়ে ওঠায় বিরূপ প্রভাব পড়েছে ক্ষুদ্র এই শিল্পে। একই সঙ্গে এই শিল্পের সঙ্গে জড়িত সহস্রাধিক শ্রমিক কারিগরদের জীবিকা হুমকির মুখে পড়েছে।
স্থানীয় বেকারীর সূত্রে জানা যায়, শাহরাস্তি উপজেলায় ছোট-বড় মিলিয়ে ২৫টি বেকারী রয়েছে। এসব বেকারীর মূল উপকরণ (কাঁচামাল) ময়দা-আটা, চিনি, সয়াবিন তেল, পাম অয়েল ও ডালডা। যা স্থানীয় পাইকারী বাজার থেকে সংগ্রহ করা হয়। এতদিন এসব পণ্যের পাইকারী মূল্য স্থিতিশীল থাকলেও গত মধ্য নভেম্বর থেকে বাজার অস্থির হয়ে ওঠে। এ সময় থেকে অস্বাভাবিক হারে দফায় দফায় মূল্য বৃদ্ধির চাপে পড়ে স্থানীয় বেকারী শিল্প। এসব শিল্পের উপকরণ (কাঁচামাল) পাইকারী মূল্য কেজি প্রতি বৃদ্ধি পেয়েছে ৫ থেকে ১০০ টাকা পর্যন্ত। সরেজমিনে উপজেলার পাইকারী বাজার ঘুরে দেখা যায়,
বাজারে ৭০ টাকা কেজি দরে সয়াবিন তেল প্রতি ড্রাম (১৮০ কেজি) ১২ হাজার ৬০০ টাকার স্থলে বিক্রি হচ্ছে ৩৩ হাজার টাকায়। ৬২ টাকা কেজি দরে পাম অয়েল প্রতি ড্রাম (১৮৬ কেজি) ১১ হাজার ৫০০ টাকার স্থলে বিক্রি হচ্ছে ৩৪ হাজার টাকায়। ৩৬ টাকা কেজি দরে চিনি প্রতি বস্তা (৫০ কেজি) ১৮ শত টাকার স্থলে বিক্রি হচ্ছে ৪ হাজার টাকায়। ৩০ টাকা কেজি দরে ময়দা প্রতি বস্তা (৭৪ কেজি) ২ হাজার ২০০ টাকার স্থলে বিক্রি হচ্ছে ৪ হাজার ২০০ টাকায়। ২০ টাকা কেজি দরে আটা প্রতি বস্তা (৫০ কেজি) ১০০০ টাকার স্থলে বিক্রি হচ্ছে ২৩শত টাকায়।  ৭৫ টাকা কেজি দরে ডালডা ১ কার্টন (১৬ কেজি) ১২০০ শত টাকার স্থলে বিক্রি হচ্ছে ৩৪০০শত টাকা। সকল উৎপাদিত কাচামালগুলো তিনগুন দাম বেড়েছে।
প্রায় ৩ মাস যাবত ক্ষণে ক্ষণে উপকরণের মূল্য বৃদ্ধিতে পণ্যের উৎপাদন খরচ ৩০ ভাগ বৃদ্ধি পাওয়ায় পণ্য উৎপাদন করতে গিয়ে লোকসান গুণতে হচ্ছে বেকারী মালিকদের। লোকসান থেকে বাঁচতে পণ্যের দাম বৃদ্ধি জরুরী হয়ে পড়েছে। কিন্তু প্রতিযোগিতাপূর্ণ বাজারের কারণে পণ্যের মূল্যেও বাড়াতে পারছে না ব্যবসায়ীরা। ফলে এমন ত্রিশঙ্কু অবস্থায় পড়ে ক্ষুদ্র প্রতিষ্টানগুলো বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়েছে। ইতোমধ্যে লোকসান গুণতে গিয়ে বিসমিল্লাহ বেকারীসহ কয়েকটি ছোট বেকারী বন্ধ হয়ে গেছে। এতে কর্মহীন হয়ে পড়েছে শতাধিক শ্রমিক কারিগর। এসব পরিবার এখন অভাব অনটনে দিনযাপন করছে।
চাঁদপুর জেলা বেকারী এন্ড কনফেকশনারী মালিক সমিতির শাহরাস্তি উপজেলা শাখার
সভাপতি ও ভাই ভাই চিটাগং বেকারী এন্ড কনফেকশনারীর মালিক মোঃ ফারুক হোসেন বলেন, বেকারী পণ্য তৈরীর কাঁচামালের (উপকরণ) পাইকারী মূল্য ঘন ঘন উর্ধ্বমুখী হওয়ায় পণ্য তৈরীর উৎপাদন খরচ ৩০ ভাগ বৃদ্ধি পেয়েছে। কিন্তু বাজারে পণ্যের দাম বাড়ানো সম্ভব হচ্ছে না। আগের দামে পণ্য বিক্রি করতে গিয়ে প্রতিটি বেকারী ফ্যাক্টরীকে ২ থেকে ৩ লাখ টাকা লোকসান হচ্ছে। অনেক ফ্যাক্টরী লোকসান পোষাতে না পেরে বন্ধ হয়ে গেছে। বাদবাকি বেকারী ফ্যাক্টরীগুলোও বন্ধের উপক্রম হয়েছে। পাইকারী মূল্য স্বাভাবিক না হলে আরও কিছু ফ্যাক্টরী বন্ধ হওয়ার আশংকা রয়েছে। এমন পরিস্থিতি সামাল দিতে কনফেকশনারী সমিতি পণ্যের দাম বৃদ্ধির চিন্তা ভাবনা করছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
শাহরাস্তি উপজেলা বেকারী মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও জনতা বেকারীর স্বত্বাধিকারী সাইফুল ইসলাম জানান, ময়দা-আটা, সয়াবিন ও পাম অয়েলের পাইকারী মূল্য দুই থেকে তিনগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে করে পণ্যের বাজার দরের তুলনায় উৎপাদন খরচ উঠছে না। ফলে ফ্যাক্টরী চালাতে গিয়ে ২ থেকে ৪ লাখ টাকা লোকসান দিতে হচ্ছে। বৈরী আবহাওয়া ও লোকসানের কারণে ইতোমধ্যে ৫টি ছোট-বড় ফ্যাক্টরী বন্ধ হয়ে গেছে। চালু ফ্যাক্টরীগুলোর অবস্থা করুণ বলে মন্তব্য করেন তিনি। এসব ক্ষুদ্র শিল্প বাঁচাতে পণ্যের বাজার মূল্য নিয়ন্ত্রণে সরকারের কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণের আহ্বান জানান তিনি।


এই বিভাগের আরও খবর