নিজস্ব প্রতিবেদক : বর্ষার শুরুতেই মেঘনার ভাঙন কবলে পুরানবাজার শহর রক্ষা বাঁধ, প্রতি বছর রাক্ষসী মেঘনার হিংস্র ছোবলে বিলীন হতে হতে আজ চাঁদপুরের বাণিজ্যিক এলাকা পুরানবাজার মানচিত্র থেকে হারিয়ে যাচ্ছে। সরকার ক্ষমতার পালা বদল থাকলেও স্থায়ী বাঁধের কোন পরিকল্পনা নেই বলে আজো মেঘনার তলে বিলীন হচ্ছে মানুষের বসত ভিটে সহ মিল কারখানা সরকারি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলি।
সরকারের পরিবর্তনের সাথে সাথে চাঁদপুর আসনের এমপিসহ পৌর পিতারও পরিবর্তন হয়। অথচ নির্বাচনকে সামনে রেখে তাদের প্রতিশ্রুতি থাকে মেঘনার ভাঙন থেকে পুরানবাজার তথা চাঁদপুরকে রক্ষা করবো। কিন্তু পৌরবাসী সেই স্বপ্ন কেউ পূরণ করেনি যুগের পর যুগ পেরিয়ে গেলেও। তবে কবে হবে পুরানবাজারবাসির দাবি পূরণ সেটাও সঠিকভাবে বলা যাচ্ছে না। সোমবার সরজমিন পৌর এলাকার ২নং ওয়ার্ডের রওনাগোয়াল, সাবেক কমিশনার মরহুম নুর মোহাম্মদ বকাউল বাড়ির পাশের শহর রক্ষা বাঁধ ধস দেখা য়ায়, সিসি ব্লকের বাঁধ ভেঙে মেঘানার বুকে তলিয়ে গেছে বিরাট এলাকা, তার সাথে রক্ষা বাঁধের সি সি ব্লকগুলি দেবে গিয়ে ভাটলে পরিণত হয়েছে। যার কারনে মেঘনার উত্তাল ঢেউয়ের আঘাতে পারের মাটির বিরাট বিরাট চাকা ভেঙে পড়তে দেখা যায়, এতে করে রওনাগোয়ালসহ হরিসভা এলাকা বাসিদের মাঝে আতংক বিরাজ করছে। কেনো না রওনাগোয়াল থেকে হরিসভা এলাকাটি বেশি দূরে নয় বলে তারাও মেঘনার ভয়াবহ ভাঙন কবলের ইংগিত করছে। এদিকে আরো লক্ষ করা যায়— বালি ভর্তি জিও বস্তা গুলিও পার থেকে সরে যাচ্ছে। মেঘনার উত্তাল ঢেউ যেনো বর্ষার আগমনি বার্তা হিসেবে সতর্ক করে ভাঙন লিলায় মেতে উঠেছে।
অপর দিকে গেলো দু’বছর আগে হরিসভা মন্দির অংশের বিরাট এলাকা মেঘান বুকে তলিয়ে গেলোও, তাহা বালির বস্তা ফেলে সাপোর্ট করা হয়। কিন্তু বিগত দুই বছরে ওই এলাকায় সিসি ব্লক দিয়ে বাঁধের ব্যবস্থা না করায় এখনি ঝুকিতে পরেছে। লক্ষ্য করা যায়, ওই বালির বস্তা গুলি মেঘার ঢেউয়ের আঘাতে আস্তে আস্তে নিচের দিকে তলিয়ে যাচ্ছে, এতে করে হরিসভা বাসিন্দারা এবারো ভিটে হারা হবার আশংকা করছেন।
তারা আমাদের জানান আমরা মেঘনা পার বাসি, আমাদের খোজ খবর নেবার মত কোন মানুষ নেই, যদি থাকতো তাহলে স্বাধীনতার পর থেকে রাক্ষসী মেঘনার ছোবলে আমাদের বাব দাদার সম্পদ নদি গর্বে বিলীন হতো না। বর্তমানে হরিসভা এলাকায় মেঘনার পাশ ঘিরে কয়েকটি সনাতন ধর্মাবলম্বীদের মন্দির রয়েছে। যার মধ্যে লোকনাথ মন্দির, দূর্গা মন্দির, শীতলা মন্দির, কালি মন্দির, স্কন মন্দির ও রাম ঠাকুর মন্দির। এসব মন্দির গুলিতে প্রতিদিন শত শত ভক্তরা পূজোসহ ধর্মীয় আরাধনা করে থাকে। আর বিভিন্ন ধর্মীয় উৎসবে হাজার হাজার ভক্তবৃন্দদের সমাগম ঘটে। চাঁদপুরের একমাত্র সনাতন ধর্মাবলম্বীদের আরাধনার স্থান এই হরিসভা এলাকা, অথচ কয়েক বছরে, মেঘনার ভাঙনে বিলীন হয়েছে কয়েক একর জমি। যাহা রক্ষা করতে কোন সরকার তেমন কোন গুরুত্ব দেয়নি বলে আজও মেঘনার ভাঙন কবলে আমরা বসবাস করছি, কখন মেঘনা আমাদের বসত ঘর নদী গর্বে টেনে নিবে সেই চিন্তায় থাকি।
তাছাড়া আমরা দেখি যে, গত কয়েকদিন যাবত রওনাগোয়াল এলাকায় শহর রক্ষা বাঁধ ভেঙে গেছে। সি সি ব্লকসহ বালির বস্তা নদী গর্বে চলে যাচ্ছে। অথচ পানি উন্নয়ন বোডের কোন নজর নেই, তারা বসে থাকে কখন সরকারি ভাবে তাদের নির্দেশ প্রধান করবে ভাঙন রোধে ব্যবস্থা নিতে। বর্তমানে বর্ষার শুরুতেই যে ভাবে মেঘনার ভাঙন দেখা দিয়েছে, পুরো বর্ষায় রওনাগোয়ালসহ হরিসভা এলাকা মেঘনার তলে তলিয়ে যাবে, তার সাথে পুরানবাজারের ঐতিহ্য বাণিজ্যিক নামটি মূছে যাবে। আর তাই অচিরেই ভাঙন রোধে ব্যবস্থা না নিলে শহর রক্ষা বাঁধ টিকিয়ে রাখা দূস্কর হয়ে পড়বে, আর তাই মাননীয় শিক্ষামন্ত্রীসহ জেলা প্রশাসক ও পৌর মেয়রের দৃষ্টি আকর্ষণ করছেন পুরানবাজারবাসী।