সরকারী ৪টি সংস্থার লক্ষ টাকার ৫টি মূল্যবান গাছ অবৈধ ভাবে কেটে নিলেন মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স কর্মকর্তারা
তাৎক্ষনিক পুলিশী বাধায় ও গাছ কাটা বন্ধ হয়নি
চাঁদপুর প্রতিনিধি
চাঁদপুর শহরের উত্তর শ্রীরামদী নিশি বিল্ডিং এলাকার মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্র ভবনের
বাউন্ডারির বাহিরে থাকা সরকারী জায়গায় রোপনকৃত প্রায় লক্ষ টকিার ৫টি বড়
আকারের পাহাড়ি মূল্যবান দামী গাছ কেটে নিয়েছে, মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্র
ভবনের কর্মকর্তারা। এ অবৈধ ভাবে গাছ কাটর বিষয়টি নিয়ে এ সময় জানতে
চাওয়াতে মুক্তিযোদ্ধার সন্তান ও এখানে অবস্থানকৃত সেটেল্টম্যান অফিসের একজন
কর্মকর্তা নূরুন নাহারের সাথে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কমান্ডার এমএ ওয়াদুদের সাথে
বাকবিতন্ডার সৃষ্টি হয়েছে বলে সেটেল্টম্যান অফিসের এ কর্মকর্তা সংবাদ
মাধ্যমকে জানিয়েছেন।
গতকাল রোববার (১৪ মে) ও আজ সোমবার (১৫মে) ২দিন যাবত দিনের বেলায় এ গাছ
গুলো কাটা হয়েছে নিশিবাবুর নিশিবিল্ডিং উত্তর শ্রীরামদী এলাকায়।
তাৎক্ষনিক এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে অভিযোগ পেয়ে চাঁদপুর মডেল থানার অফিসার
ইনচার্জ মুহাম্মদ আব্দুর রশিদের নিদের্শে থানার সহকারী উপপরিদর্শক মো:
মিজানুর রহমান সঙ্গীয় পুলিশ ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিদর্শন করেন
এবং ঘটনার সত্যতা পান। এ সময় থানার এ কর্মকর্তা চাঁদপুরের কয়েকজন সংবাদ
কর্মীর উপস্থিতিতে চাঁদপুর জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কমান্ডার এমএ ওয়াদুদের সাথে
মুখোমূখি হয়ে জিজ্ঞাসা বাদ করেন।
এ সময় এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি জানান,ঘূর্নিঝড় মোখার তান্ডবের
আশংকায় মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্র ভবন ও ভবনের বাউন্ডারির ভয়াবহ ক্ষতিসাধিত হতে
পারে এ বিষয়টি তিনি জেলা প্রশাসক মো: কামরুল হাসানকে জানিয়েছেন বলে
জানান। তখন জেলা প্রশাসক ঢাকায় পারিবারিক কাজে থাকায় মুক্তিযোদ্ধা
কমপ্লেক্র ভবন ও ভবনের বাউন্ডারির ক্ষতির দিক বিবেচনা করে আমাকে মোখিক ভাবে
গাছের ডাল কেটে মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্র ভবনকে ভয়াবহতা থেকে রক্ষার জন্য বলেছে।
মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কমান্ডার এমএ ওয়াদুদের কথা শুনে মডেল থানার সহকারী
উপপরিদর্শক মো: মিজানুর রহমান গাছ না কাটার জন্য বলে কয়েকজন সংবাদ
কর্মীসহ চলে আসেন।
পরক্ষনে ঘটনা ঘটলো উলটোটা, পুলিশী বাধায়ও গাছ কাটা বন্ধ হয়নি। এ সরকারী
জায়গায় বর্তমানে অবস্থানকৃত ৪টি সংস্থা বাংলাদেশ(অব:) সেনা কল্যান
সংস্থা,জেলা মহিলা সংস্থা (মহিলা সমিতি) সরকারী ইসলামি ফাউন্ডেশন গবেষনা
কেন্দ্র ও সরকারী সেটেল্টম্যান্ট অফিস। এ সব অফিসের কারো সাথে যোগাযোগ
বা তাদের অনুমতি ছাড়াই মুক্তিযোদ্ধা কর্মকর্তারা প্রায় লক্ষাধিক টাকার
মূল্যবান গাছ গুলো কেটে নিয়ে বিক্রি করে দিয়েছেন বলে একটি সূত্রে জানা
গেছে।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, কয়েক একর সরকারী এনিমি জায়গায় যেখানে বহু
সংখ্যাক এ সব পাহাড়ি গাছ গুলি রোপন করার হয়,সে গাছ গুলি প্রায় ৩০ বছর
পূর্বে এ জায়গার দখলে থাকা অএ, এলাকার সমাজ সেবক প্রয়াত মুক্তিযোদ্ধ
মুহাম্মদ হানিফ ভুঁইয়া এ জায়গায় লিজ সুত্রে ভোগ করার সময় এ সব মূল্যবান
গাছ গুলি রোপন করেছিলেন। তার অকাল মৃত্যুর পর এ জায়গা জেলা প্রশাসন বুঝে
নিয়ে যান এবং পরবর্তীতে এখানে বর্তমান সরকারের আমলে প্রায় ৪(চার) কোটি
টাকা ব্যয়ে মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্র ভবন নির্মান হলেও এখানে মুক্তিযোদ্ধারা
নিয়মিত ভাবে না আসায় ভবনটি এক প্রকার পরিত্যাক্ত ভাবে পড়ে রয়েছে বলে
এলাকাবাসী জানান। এ ভবনের ভিতরে অনেক গুলো দোকান তৈরী করা হলেও সে দোকান
কোন কাজে আসছেনা। সেগুল্ধোসঢ়; এলাকার কোন ব্যবসায়ী ব্যবসা করার জন্যও
নিচ্ছেনা বলে একজন মুক্তিযোদ্ধা জানিয়েছেন। এখানে বর্তমানে ৪টি সংস্থা
তাদের কার্যক্রম করে যাচ্ছেন বলে জানা গেছে।
এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক কামরুল হাসানের সাথে মুঠো ফোনে যোগাযোগ
করলে তিনি বলেন,আমি গাছ কাটার অনুমতি দেইনি। তিনি বলেছেন,সেখানে
পরিস্কার পরি”্ধসঢ়;ছন্ন করে বাগান করবে। যদি গাছ কেটে থাকে তবে আমি দেখবো
বিষয়টি।
এ বিষয়ে চাঁদপুর সদর নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সানজিদা শাহনাজ
বলেন,আমার জানা মতে ঘূনিঝড় মোখার কারনে জেলা প্রশাসক স্যারকে জানানো
হলে তিনি গাছের ডালপালা কাটতে বলতে পারেন। তিনি পুরো গাছ কেটে নিয়ে
যেতে বলেনি। আমি এ বিষয়টি জানলাম আমি স্যারকে জানাবো।
এ বিষয়ে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কমান্ডার এমএ ওয়াদুদের সাথে যোগাযোগ করা হলে
তিনি বলেন, ঘুনিঝড় মোখার কারনে মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্র ভবন ও ভবনের বাউন্ডারির
ক্ষতির দিক বিবেচনা করে আমাকে জেলা প্রশাসক মোখিক ভাবে গাছের ডাল
কেটে মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্র ভবনকে ভয়াবহতা থেকে রক্ষার জন্য বলেছে। আমি গাছ
কাটবো না। কাটি ওনা। এ বিষয়ে আমি কাকে জবাব দীহি করবো। আমার জায়গায়
গাছ। বাউন্ডারির বাহিরে আমার জায়গা রয়েছে। আমি জবান দিতে হলে
প্রধানমন্ত্রীর কাছে জবাব দিব। আমি মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্র ভবন ও ভবনের বাউন্ডারির
ক্ষতির দিক বিবেচনা করে ডাল পালা কেটেছি।
এ বিষয়ে থানার সহকারী উপপরিদর্শক মো: মিজানুর রহমান জানান, মুক্তিযোদ্ধা
সংসদ কমান্ডার এমএ ওয়াদুদ বলেছে,তিনি ঘূনিঝড় মোখার কারনে মুক্তিযোদ্ধা
কমপ্লেক্র ভবন ও ভবনের বাউন্ডারি রক্ষার স্বার্থে জেলা প্রশাসক স্যারের মূখিক
অনুমতি নিয়ে গাছের ডাল কাটার ব্যবস্থা করেছে। গাছ কাটবে না।
এ বিষয়ে চাঁদপুর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মুহাম্মদ আব্দুর রশিদ
জানান,আমি গাছ কাটার কথা শুনে থানার অফিসার পাঠিয়ে দিয়েছি। সেখানে
মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্র ভবন ও বাউন্ডারির স¦ার্থে ডালপালা কাটার কথা কিন্তু গাছ
কাটা বিষয়টি জানা নেই। বিষয়টি তদন্ত সাপেক্ষে দেখবো।
শওকত আলী,চাঁদপুর। ০১৭১২১৯৫৯৪২। ১৫-০৫-২০২৩।