নিজস্ব প্রতিবেদকঃ গ্রীষ্মের উত্তপ্ত দিনে তৃপ্তি এনে দেয় এক ফালি তরমুজ। গ্রীষ্মজুড়ে ফলটির চাহিদাও থাকে ব্যাপক। ফলে গ্রীষ্মের ফল হিসেবে সুপরিচিত এ তরমুজ।তবে এবার বসন্তের শুরু থেকেই চাঁদপুরের শহরের বিভিন্ন বাজার ও গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে ব্যাপকহারে দেখা মিলছে তরমুজের। কিন্তু এখনও শীতের আমেজ থাকায় দাম কম হলেও বিক্রি খুবই কম। ফলে হতাশ তরমুজ বিক্রেতারা। আর চুক্তি অনুযায়ী আগাম জাতের তরমুজ চাষিদের কাছ থেকে কিনে আড়তে ফেলে রেখে লোকসানের শঙ্কায় দিন কাটাচ্ছেন পাইকারি ব্যবসায়ীরা।জেলা কৃষি বিভাগ সূত্র জানায়, বাজারে এখন যে তরমুজ দেখা যাচ্ছে, তা উত্তরাঞ্চলে চাষ হয়নি। দেশের দক্ষিণাঞ্চলে চাষ হওয়া আগাম জাতের তরমুজ চাঁদপুর শহর সহ বিভিন্ন বাজারে এসেছে।চাঁদপুরের উপজেলাগুলোতে তরমুজ চাষের উপযুক্ত মাটি না পাওয়ায় এখন অবধি কেউ এ ফল চাষ করতে পারেনি। প্রতি বছরই জেলা কৃষি অফিসের মাধ্যমে বিভিন্ন স্থানে তরমুজ চাষের চেষ্টা করেও সফলতা পাচ্ছেন না কৃষকগন। তরমুজ চাষের জন্য যেমনই প্রয়োজন মাটি তেমনই প্রয়োজন উপযুক্ত আবহাওয়া।সরেজমিনে দেখা গেছে, গত দুই সপ্তাহ ধরেই চাঁদপুর শহরের চৌধুরী ঘাট পাইকারি বাজার, পালবাজার কালিবাড়ি নতুনবাজার বাজার বাবুর হাট,ওয়্যারলেস বাজার, বাবুরহাট বাজার, বড়স্টেশন সহ বাজার বাস-স্টেশনে ফলের দোকানে ও কাঁচাবাজার সহ বিভিন্ন বাজারে তরমুজ বিক্রি করা হচ্ছে।চৌধুরী ঘাট পাইকারি আড়ত থেকে এসব তরমুজ কিনে বাজারে ভোক্তাদের কাছে বিক্রি করছেন কিছু খুচরা ফল ব্যবসায়ী। খুচরায় প্রতি পিছ ২০০-৫০০ টাকা দর হাঁকানো হচ্ছে এসব তরমুজের।বৃহস্পতিবার (৭এপ্রিল ) দুপুরে চাঁদপুর বাস-স্ট্যান্ডে ফলের দোকান থেকে তরমুজ কিনছিলেন ষোলঘর এলাকার বাসিন্দা আকিত জাবেদ। তিনি বলেন, ‘ফাল্গুন মাস শেষে চৈত্র মাস শেষ হতে চললেও এখনও শেষ রাতে শীত পড়ছে। এজন্য তরমুজ খাওয়া হচ্ছে না। তবে আমার মেয়ের তরমুজ খুব পছন্দ করে। তাই ফলটি দেখে কিনলাম’।চৌধুরী ঘাট পাইকারি তরমুজ বিক্রেতা মোঃ মেহেদি বলেন, ‘অন্য বছরগুলোতে এ সময়েই আবহাওয়া গরম থাকে। সেই হিসেবে আগাম জাতের তরমুজ চাষ করেছেন অনেক চাষি। আমরাও লাভের আশায় সূদুর বরগুনা ও পটুয়াখালী জেলা থেকে পাইকারি দামে কিনে খুচরা বিক্রি করছি। তবে শীত থাকায় বিক্রি নেই বললেই চলে। আবহাওয়া গরম হলে বিক্রি জমবে বলে আশা করছেন তিনি।মৌসুম শুরুর আগেই বিভিন্ন জেলার চরাঞ্চলের তরমুজ চাষিদের সঙ্গে চুক্তি করে রেখেছেন অনেক আড়ৎদাররা। চুক্তি অনুযায়ী এখন যে তরমুজ উঠছে তা আড়তে আনতে বাধ্য তারা। আবহাওয়া খারাপের কারণে চাহিদা কম। ব্যাপক লোকসানের মুখে পড়তে হবে বলে ধারণা করছেন তারা।ব্যবসায়ি মোঃ শরিফ হোসেন বলেন আগাম জাতের কালা, বাংলালিংক, গ্রামীণ, আনারকলি, অলক্লিন, চায়না-২, এশিয়ান-২, বালিসহ বিভিন্ন জাতের তরমুজ রয়েছে।চাঁদপুরের বাজার গুলোতে কেবলমাত্র বাংলালিংক জাতের তরমুজ বিক্রি শুরু হয়েছে।উপজেলা কৃষি অফিসার নরেশ চন্দ্র জানান, বরিশাল, বরগুনা, পটুয়াখালী ও ভোলাসহ দক্ষিণাঞ্চলের তরমুজ দিয়েই চাঁদপুরের চাহিদা মেটে। ফাল্গুন মাস থেকেই সচরাচর গরম পড়তে শুরু করেছে। গরম তীব্র হওয়ার সাথে সাথে বাজারে তরমুজের চাহিদা বাড়বে।তিনি বলেন, ‘লাভবান হতে ব্যবসায়ীরা মৌসুম জুড়ে তরমুজ ব্যবসায় ঝুঁকছেন। তবে এবার আবহাওয়া ভিন্ন বার্তা দেওয়ায় তারা লোকসানের মুখে পড়তে পারেন।