নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশ
দীর্ঘ দেড় বছর নিজের সহকর্মীদের নিয়ে কাজ করার পর তাদের এবং চাঁদপুরের লাখো মানুষের হৃদয় নিংড়ানো ভালোবাসা নিয়ে গতকাল সকালে বদলিজনিত কারণে চাঁদপুর থেকে বিদায় নিয়েছেন জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশ। বিদায়বেলায় সকালে তিনি বাংলো থেকে বের হয়ে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে আসেন। এসময় আগে থেকে নীচে অপেক্ষমান সকল শ্রেনির সহকর্মিরা তাকে উপরে নিতে নীচে অবস্থান নেয়। পরে তিনি তার কন্যা ও স্বামীকে নিয়ে নিজের কক্ষে ঢুকেন। তখন সেখানে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসকগন, সহকারী কমিশনারবৃন্দ, প্রশাসনিক কর্মকর্তা কর্মচারীরা রাজনীতিক সামাজিক, সুশীল ও শুভানুধ্যায়ীরাও উপস্থিত ছিলেন। তখন এক আবেগঘন পরিবেশের সৃষ্টি হয়। ঘুরে ঘুরে তিনি তার সহকর্মীদের সাথে কথা বলেন। সহকর্মীরা তাঁকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানান । তিনি তাদের বলেন, নিরলস কাজ করে যাবেন মানুষের জন্য নিবেদিত। কাজের প্রয়োজনে আপনাদের সাথে হয়তো কোন কোন সময়ে রাগ করেছি, তা মনে রাখবেন না। আপনাদের কর্মকাণ্ডে আমি সন্তুষ্ট, আমি আপনাদের অনেক সহযোগিতা পেয়েছি বলেই চাঁদপুরের কল্যাণে কাজ করতে পেরেছি। দোয়া করবেন আমার এবং আমার পরিবারের জন্য। যেখানেই থাকি সেখানেই আপনারা আমার স্মরণে থাকবেন। যিনি নতুন জেলা প্রশাসক আসছেন, আমাকে যেমন সহযোগিতা করেছেন ওনাকেও করবেন। এরপর তিনি অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক ( সার্বিক) ইমতিয়াজ হোসেনের কাছে দায়িত্বভার হস্তান্তর করেন। বুধবার নতুন জেলা প্রশাসক কামরুল হাসান এলে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক ইমতিয়াজ হোসেন তার কাছে দায়িত্বভার হস্তান্তর করবেন।
পরে বিদায়ী জেলা প্রশাসক অন্জনা খান মজলিশ চাঁদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নাসির উদ্দীন আহমেদ, সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু নঈম দুলাল পাটওয়ারীসহ রাজনীতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন। পরে তিনি উপর থেকে নেমে নীচে নেমে আসেন। সেখানে এলে তিনি তার ঢাকার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হন। যথাযথ সম্মান জানানোর ক্ষেত্রে তাঁর গাড়ির বহরে যুক্ত হয় বেশ কয়েকটি গাড়ি। পরে তাকে জেলা প্রশাসকের সহকর্মিরা প্রটোকল দিয়ে চাঁদপুরের শেষ সীমান্ত কুমিল্লার দাউদকান্দি পর্যন্ত পৌঁছে দিয়ে আসেন। তিনি চাঁদপুরের পর দ্বিতীয়বারের জেলা নেত্রকোণার জেলা প্রশাসক হিসেবে বুধবার ( ১ জুন) যোগদানের কথা রয়েছে।
জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিস ২০০৩ সালে ২২তম বিসিএস প্রশাসনের-এর মাধ্যমে চাকরিতে যোগদান করেন। দেশের বিভিন্ন স্থানে সরকারের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি মানিকগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক এবং পরবর্তীতে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের উপসচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। পরে তিনি সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের উপসচিব দায়িত্ব পালনের মধ্য দিয়ে তিনি চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক হিসেবে নিয়োগ পান। এখানে তিনি চাঁদপুরের স্বার্থ রক্ষায় নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন বন্ধ, খাসজমি উদ্ধার, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে জমি অধিগ্রহণে সরকারের বিপুল পরিমান সাশ্রয়ের বিষয়ের মতো কতোগুলো সাহসী কাজ করে দেশব্যাপি আলোচিত হয়েছেন। এছাড়াও করানাকালে, উন্নয়নে তার ছিলো অনেক অবদান।