নিজস্ব প্রতিবেদকঃ চাঁদপুর সদরের বিষ্ণুদী এলাকার মোঃ হান্নান মৃধার(৩৮) ধার দেওয়া ৬ লক্ষ টাকা চাওয়ার জন্যই তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে বলে সন্দেহ করছেন তার স্ত্রী আয়েশা আক্তার। আর ওই টাকা ধার নিয়েছিলেন আয়েশা আক্তারের ননদের স্বামী রুবেল বেপারী(৩৫)। যেজন্য রুবেল বেপারী ও তার সহযোগী কামাল মৃধা(৪৮), অন্তর মিয়াজী(২৯) ও সেলিনা বেগম (৩৫) কে হান্নান মৃধার মৃতের ঘটনায় জড়িত সন্দেহে তিনি সংশ্লিষ্ট যশোর জেলায় আদালতে হত্যা মামলা করেছেন। যা ইতিমধ্যে তদন্ত শুরু করেছে পিবিআই যশোরের টিম।
১ জুন বুধবার এক সাক্ষাৎকারে সাংবাদিকদের কাছে তার স্বামী হত্যা হয়েছে জানিয়ে সবার সহযোগিতা চেয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
আয়েশা আক্তার সাংবাদিকদের বলেন, আমার স্বামী হান্নান মৃধা নিখোঁজ হওয়ায় আমি গত ২’রা মার্চ চাঁদপুর সদর মডেল থানায় জিডি করেছি। জিডি নং-১০৬। পরবর্তীতে ১৩ মার্চ বিকাল ৬ টায় যশোর বেনাপোলে স্বামী হান্নান মৃধার ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার হওয়ার খবর জানায় পুলিশ। তখন এই খবর পেয়ে আমার স্বামীর লাশ দেখতে যেতে চাইলে বাঁধা দেয় রুবেল, কামাল, অন্তর ও সেলিনা। তারা আমাকে আমার ৩ বছরের শিশু সন্তান আদর কে সহ গাড়ীতে উঠার সময় ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয়। এমনকি আমার দুই ভাই শাওন প্রধানীয়া ও রোজ আহমেদ হীরাকেও গাড়ীতে উঠতে না দিয়ে উল্টো মারধর করে।
আয়েশা আক্তার সাংবাদিকদের আরও বলেন,আমার স্বামী হান্নান ব্যাবসায়িক কাজের জন্য আমার ননদের জামাই রুবেল বেপারীকে ৬ লক্ষ টাকা ধার দেয়। সেই পাওনা টাকা চাইলে রুবেল আমার স্বামীর সাথে নানা টাল বাহানা শুরু করে। এর কয়েকদিন পরেই আমার স্বামী হান্নান নিখোঁজ হন এবং পরবর্তীতে তার ঝুলন্ত লাশ যশোরে পাওয়া যায়। আমার ধারনা রুবেল ও তার সহযোগীরাই ওই ৬ লক্ষ টাকা না দেওয়ার জন্য পরিকল্পিতভাবে হান্নানকে মেরে পরে ঝুলিয়ে রেখে পরিকল্পিতভাবে এই হত্যাকান্ড ঘটিয়েছে। তাই আমি এর সুষ্ঠু ন্যায় বিচার পেতে যশোরে আদালতের শরনাপন্ন হয়েছি। যা যশোরের পিবিআই তদন্ত করছে।
এদিকে এ ঘটনায় চাঁদপুর সদর মডেল থানায় পূর্বেই মৃত হান্নার মৃধার বড়বোন আমেনা বেগম(৪০) বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। মামলা নং- জি আর-১৫০/২২। সেই মামলায় সন্দেহভাজন হিসেবে গ্রেফতার হয়ে জেল হাজতে রয়েছেন মৃত হান্নান মৃধার স্ত্রী আয়শা আক্তারের বড় ২ ভাই শাওন প্রধানীয়া ও রোজ আহমেদ হীরা নামে দুজন। যদিও এই মামলাটিকে আয়েশা আক্তার ঘটনা ভিন্নখাতে প্রভাবিত করার ষড়যন্ত্র মামলা বলে মনে করছেন। এ বিষয়ে যশোর পিবিআই এর এস আই গিয়াস বলেন, আমরা বিভিন্ন ভিডিও ফুটেজ ও মামলার আলামত সংগ্রহ করছি। এ মামলার আইনগত পদক্ষেপ অব্যাহত রয়েছে। তবে এ ঘটনায় চাঁদপুর সদর মডেল থানায় মামলা করা আমেনা বেগমের মন্তব্য জানতে একাধিকবার চেষ্টা করলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
বিষয়টি নিয়ে চাঁদপুর সদর মডেল থানার ওসি আব্দুর রশীদের সাথে আলাপ করলে তিনি বলেন,আমরা এ ঘটনায় ২ জনকে আটক করে জেল হাজতে পাঠিয়েছি। বিষয়টির বিচার কাজ তদন্তাধীন রয়েছে।
উল্লেখ্য, গেলো ১ মার্চ মঙ্গলবার চাঁদপুর থেকে নিখোঁজ হওয়ার পর ১৩ মার্চ যশোর বেনাপোল এলাকা থেকে আবুল হোসেন মৃধার ছেলে মোঃ হান্নান মৃধার ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনার এতো দিন পার হলেও এটির রহস্য নিয়ে ধূম্যজাল এখনো পরিষ্কার হয়নি।