শিরোনাম:
ফরিদগঞ্জ উপজেলা স্কাউট সম্পাদক দুর্নীতি ও অনিয়ম ধামাচাপা দিতে ঘুরছেন বিভিন্ন মহলের ধারে ধারে চাঁদপুরের ৮ উপজেলা সহ দেশের ৪৯৫ টি উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানকে অপসারন চাঁদপুর জেলার ৭টি সহ সারাদেশে ৩২৩ পৌরসভার মেয়র অপসারণ ফরিদগঞ্জে কুকুরের কামড়ে আহত ২০ কচুয়ায় মাদক মামলায় সাজাপ্রাপ্ত আসামী গ্রেপ্তার মেঘনায় কার্গোর ধাক্কায় তলা ফেটেছে সুন্দরবন -১৬ লঞ্চের, নারী নিখোঁজ ষোলঘর আদর্শ উবি’র ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি অ্যাডঃ হুমায়ূন কবির সুমন কচুয়ায় নবযোগদানকৃত প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারকে শিক্ষক সমিতি শুভেচ্ছা মতলব উত্তরে লেপ-তোশক তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছে কারিগররা উপাদী উত্তর ইউনিয়নে দীপু চৌধুরীর স্মরণে মিলাদ ও দোয়া

প্রধানমন্ত্রীর ঈদ উপহার হি‌সে‌বে ভূমিসহ ঘর পাচ্ছেন গৃহহীনরা —– জেলা প্রশাসক অন্জনা খান মজলিশ

reporter / ২২১ ভিউ
আপডেট : সোমবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২২

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
মুজিববর্ষ উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রীর উপহার হিসেবে ৩য় পর্যায়ে চাঁদপুরের ৭৫২ পরিবারকে ভূমিসহ গৃহ হস্তান্তর করা হবে। আগামি ২৬ এ‌প্রিল সারাদেশে একযোগে ঘর প্রদান উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ উপল‌ক্ষে সাংবাদিকদের সাথে মত‌বি‌নিময় ও প্রেস ব্রিফিং ক‌রে‌ছেন চাঁদপুর জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশ।
২৪ এ‌প্রিল রোববার সকাল সা‌ড়ে ১১টায় জেলা প্রশাসক স‌ম্মেলন ক‌ক্ষে এই মত‌বি‌নিময় ও প্রেস ব্রিফিং অনু‌ষ্ঠিত হয়।
অনুষ্ঠানের শুরুতেই প্রধানমন্ত্রীর ভূমিসহ ঘর কার্যক্রমের প্রেজেনটেশন উপস্থাপন ক‌রেন সদর উপ‌জেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সান‌জিদা শাহনাজ।
এতে জানানো হয়, চাঁদপুর জেলা ১২৩‌টি ঘর ভূ‌মিহীন‌দের দেওয়া হ‌চ্ছে। এর ম‌ধ্যে চাঁদপুর সদরে ২২‌টি, কচুয়া উপ‌জেলায় ২০‌টি, ফ‌রিদগঞ্জে ৫‌টি, মতলব দ‌ক্ষি‌ণে ১৯‌টি, হাজীগ‌ঞ্জে ৩৪‌টি, শাহরা‌স্তি‌তে ২৩‌টি। এছাড়া হাইমচর উপ‌জেলায় ৬২৯‌টি পরিবারকে ভূমিসহ ঘর প্রদান করা হবে।
জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশ তার বক্তব্যে বলেন, আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠায় নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। তিনি সবসময় এদেশের মানু্ষের কথা চিন্তা করেন। তিনি স্বপ্ন দেখেন এদেশের প্রতিটা মানুষের একটি স্থায়ী ঠিকানা হবে। সেই স্বপ্ন থেকেই তিনি মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষে এদেশের ভূমিহীনদের ভূমি এবং গৃহহীনদের ঘর দেয়ার প্রকল্প হাতে নিয়েছেন।
তিনি আরো বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে ১ম এবং দ্বিতীয় ধাপের পর এবা ৩য় ধাপে ভূমিসহ ঘর দেয়া হবে। এবারের ঘরগুলো মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ঈদ উপহার। আগে ঈদের আগে চাল-ডাল, ঈদবস্ত্র দেয়া হতো। এবারে আমাদের প্রধানমন্ত্রী অসহায়দের ভূমিসহ ঘর দিবেন। এতে করে গৃহহীনদের মুখে হাসি ফুটবে।
সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, চাঁদপুরে যারা ঘর পাচ্ছে তাদের নাম ২ বছর আগেই যাচাই-বাছাই করে প্রস্তুত করা হয়েছে। শাহরাস্তি ও হাজীগঞ্জের ঘরগুলো প্রস্তুত হয়নি। কারণ সেখানে যে জমিগুলো পাওয়া গেছে তা অত্যন্ত নিচু। সরকারের পক্ষ থেকে নিচু জমিতে ঘর না করতে বলা হয়েছে। কারণ এতে করে ঘর ভেঙে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকবে।
তিনি আরো বলেন, এবারে আমরা একক ঘরগু‌লো লোকাল‌য়ে করছি। এতে করে সুবিধাভোগীরা সহজে কর্মসংস্থানের সুযোগ পাবে। কারণ চর এলাকায় ঘর করলে সেখানে কর্মসংস্থানের সুযোগ থাকে না। সেখানে আলাদা শিক্ষা-প্রতিষ্ঠান, হাট-বাজার, পুকুর, মসজিদ দরকার। প্রতিটি ঘর ৩৯৫ বর্গফু‌টের দুই কক্ষ বিশিষ্ট  সে‌মিপাকা। প্রতি ঘরে থাক‌ছে এক‌টি করে টয়‌লেট, রান্না ঘর ও ইউ‌লি‌টি স্পেস থাক‌ছে।
এছাড়া লিখিত বক্তব্যে উল্লেখ করা হয়, আগামী ২৬ এপ্রিল মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ৩য় পর্যায়ে সারাদেশে প্রায় ৩৩ হাজার ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে জমি ও গৃহ প্রদানের কার্যক্রমের শুভ উদ্বোধন করবেন।
১ম পর্যায়ে প্রায় ৬৬,১৮৯ জনকে এবং ২য় পর্যায়ে প্রায় ৫৩ হাজার ৩শ’ ৪০ জনকে জমি ও গৃহ প্রদান করা হয়েছে।
বর্তমানে চাঁদপুর জেলায় ‘ক’ শ্রেণির গৃহহীন ও ভূমিহীন পরিবার এর সংখ্যা ১৬০৬ টি। চাঁদপুর জেলায় ১ম পর্যায়ে একক গৃহের মাধ্যমে ১৩৫টি পরিবারকে পুনর্বাসন করা হয়েছে। ২য় পর্যায়ে এ জেলায় একক গৃহের মাধ্যমে ১০৯টি পরিবারকে অর্থাৎ ২টি পর্যায়ে সর্বমােট ২৪৪ টি পরিবারকে পুনর্বাসন করা হয়েছে। ৩য় পর্যায়ে একক গৃহের মাধ্যমে ১২৩টি ও আশ্রয়ণ প্রকল্পের মাধ্যমে ৬২৯টি অর্থাৎ মােট ৭৫২টি পরিবারকে পুনর্বাসন করা হবে। আগামী ২৬ এপ্রিলের মধ্যে ৬৮০টি পরিবারকে এবং অবশিষ্ট ৭২টি পরিবারকে দ্রুততম সময়ের মধ্যে বাকী কাজ সম্পন্ন করে গৃহ হস্তান্তর করা হবে। এ সকল পরিবারকে এক টাকা সেলামীতে দুই শতক জমি বন্দোবস্ত প্রদান করা হয়েছে।
ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারের মধ্যে কবুলিয়ত, রেজিস্ট্রেশন, নামজারী ও জমাখারিজ খতিয়ান সৃজন, সনদপত্র প্রদানসহ সকল কাজ সম্পন্ন করা হয়েছে এবং চলমান আছে।
সরকার কর্তৃক ডি.সি.আর এর ১১৭০/- টাকা প্রদান করা হয়েছে। এতে নামজারীর জন্যও তাদের কোন টাকা ব্যয় করতে হয়না। প্রতিটি একক গৃহের আয়তন ৩৯৫ বর্গফুট। দুই কক্ষ বিশিষ্ট সেমিপাকা গৃহে একটি টয়লেট, একটি রান্নার কক্ষ ও একটি ইউটিলিটি স্পেস রয়েছে।
চাঁদপুর জেলায় খাস জমি উদ্ধার করে এই পুনর্বাসন করা হচ্ছে। নিষ্কন্টক খাস জমি না পাওয়া গেলে অবশিষ্ট ‘ক’ শ্রেণির পরিবারকে জমি ক্রয়ের মাধ্যমে পুনর্বাসনের জন্য সময়াবদ্ধ পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে।
পুনর্বাসনের বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসারবৃন্দকে জায়গা নির্বাচন, মাটি ভরাটসহ প্রস্তুতি গ্রহণের জন্য নির্দেশনা দেওয়া
হয়েছে। প্রশাসন ক্যাডারের সদস্যদের বেতনের টাকায় চাঁদপুর জেলায় ২টি পরিবারকে ঘর নির্মাণ করে দেওয়া হয়েছে। বিভিন্ন ব্যক্তি, রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব, প্রতিষ্ঠান প্রধান, সংস্থা, গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান চাঁদপুর জেলায় ১১৮টি ঘর নির্মাণ করবেন মর্মে প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেছেন।
মতবিনিময় সভায় বক্তব্য রাখেন, চাঁদপুর প্রেসক্লা‌বের সভাপ‌তি গিয়াস উ‌দ্দিন মিলন, সাবেক সভাপতি গোলাম কিব‌রিয়া জীবন, শরীফ চৌধুরী, ইকবাল হোসেন পাটওয়ারী, সাবেক সাধারণ সম্পাদক সো‌হেল রুশদী, চাঁদপুর টেলিভিশন সংবাদিক ফোরামের সাধারণ সম্পাদক দৈ‌নিক শপ‌থের সম্পাদক প্রকাশক কা‌দের পলাশ, চাঁদপুর ফটোজার্নালিস্ট এসোসিয়েশনের সভাপতি এমএ ল‌তিফ।
এসময় উপস্থিত ছিলেন, স্থানীয় সরকারের উপ-পরিচালক ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) দাউদ হোসেন চৌধুরী, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) মোসামৎ রাশেদা আক্তার, চাঁদপুর প্রেসক্লা‌বের সা‌বেক সভাপ‌তি কাজী শাহাদাত, সা‌বেক সাধারণ সম্পাদক জালাল চৌধুরী প্রমুখ।


এই বিভাগের আরও খবর