শিরোনাম:
হাজীগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন দপ্তর পরিদর্শন ও কার্যক্রম উদ্বোধন জমি বিক্রি করে দাদীকে হজ্জ পালন : সম্পত্তির ভাগ পেতে চাচার ঘর ভেঙ্গে নিল ভাতিজা কচুয়ায় তারুণ্যের উৎসব জাতীয় গোল্ডকাপ বালক অনূর্ধ্ব-১৭ ফুটবল টুর্নামেন্ট ২০২৫ অনুষ্ঠিত কচুয়ায় শিক্ষার্থীদের মাঝে শিক্ষা সামগ্রী বিতরন মতলবের মেহরনে মাদক বিরোধী ফুটবল খেলা অনুষ্ঠিত চাঁদপুরে বাসের ধাক্কায় অটোরিকশার ৫ যাত্রী আহত, কিশোর নিহত মতলবের উদ্দমদী ওয়েফারার কমপ্লেক্সের মাহফিল সম্পন্ন আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলায় ৩৬ জুলাই ঘিরে তরুণদের আগ্রহ কচুয়ার সাচারে আল শিফা হসপিটাল এন্ড ডিজিটাল ডায়াগনস্টিক সেন্টারের উদ্বোধন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জনাব তারেক রহমান কর্তৃক রাষ্ট্রকাঠামো মেরামতের ৩১ দফা বাস্তবায়নের লক্ষ্য লিফটের বিতরন

মেঘনা নদীতে বালু উত্তোলন করতে তথ্য গোপন করে নতুন রিট পিটিশন উচ্চ আদালতে মামলা খারিজ

reporter / ১৫১ ভিউ
আপডেট : মঙ্গলবার, ২৪ মে, ২০২২

বিশেষ প্রতিনিধিঃ
চাঁদপুরের পদ্মা-মেঘনা নদী থেকে বালু উত্তোলন বন্ধ হওয়ার পর আবারও বালু উত্তোলন শুরু করতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন ইউপি চেয়ারম্যান সেলিম খান। তিনি তথ্য গোপনসহ নানা কৌশলে উচ্চ আদালতে আবারও বালু উত্তোলনের অনুমতি দেয়ার জন্য আবেদন করেন। তবে এবার মামলার শুনানী শেষে সরাসরি মামলা খারিজ করে দিয়েছেন উচ্চ আদালত। দু’ দিনের শুনানি শেষে গতকাল ২৩ মে এ রায় দেন বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া এবং বিচারপতি খিজির হায়াত উচ্চ আদালতের বেঞ্চ।
এ মামলায় রাষ্ট্রপক্ষে মামলা শুনানী করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল কাজী মাঈনুল হাসান।
তিনি বলেন, ইউপি চেয়ারম্যান সেলিম খান আবারও চাঁদপুর সদর উপজেলা ও হাইমচরের ৫টি মৌজায় বালু উত্তোলনের অনুমতি দেয়ার জন্য, নিজ খরচে হাইড্রোগ্রাফিক সার্ভে করার দাবিতে আবারও একটি রীট মামলা দায়ের করেন গত এপ্রিল মাসে। আদালত ২২ মে এবং ২৩ মে এ দু’ দিন শুনানী করেন।
তিনি বলেন, বালু উত্তোলন সংক্রান্ত আইনের বিধান আমরা আদালতকে দেখিয়েছি। আরেক মামলায় সুপ্রিমকোর্টের আপিল বিভাগে যে স্থগিতাদেশ আছে সেটিও আদালতের নজরে এনেছি। সব কিছু দেখানোর পর আদালত সন্তুষ্ট হয়েছে। তাদের কোন বক্তব্যে আদালত সন্তুষ্ট হননি। তারা আমাদের বক্তব্যের কোন সদুত্তোরও দিতে পারেননি। সে কারণে আদালত সরাসরি মামলাটি খারিজ করে দিয়েছেন।
এর আগে ইউপি চেয়ারম্যান মো. সেলিম খানকে মেঘনার ডুবোচর থেকে বালু উত্তোলনে অনুমতি দিতে হাইকোর্ট যে রায় দিয়েছিলেন, তা স্থগিত করেন আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত। বালু তোলার অনুমতি বাতিল চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের (লিভ টু আপিল) পরিপ্রেক্ষিতে ৪ এপ্রিল এ আদেশ দেন চেম্বার বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম।
২০১৫ সালে নৌপথ সচল করার কথা বলে রিট করেছিলেন চাঁদপুর সদর উপজেলার ১০ নম্বর ল²ীপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. সেলিম খান। তার রিটের পরিপ্রেক্ষিতে প্রায় চার বছর আগে ২০১৮ সালের এপ্রিলে চাঁদপুর সদর ও হাইমচর উপজেলার ২১টি মৌজায় মেঘনার ডুবোচর থেকে ৩০ কোটি ৪৮ লাখ ঘনফুট বালু উত্তোলনের অনুমতি দিতে নির্দেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট।
হাইড্রোগ্রাফিক জরিপের মাধ্যমে নদীর তলদেশে কোথায় কত দূরত্বে মাটি রয়েছে, তা আধুনিক পদ্ধতিতে চিহ্নিত করা বা এর মানচিত্র তৈরি করা হয়। ডুবোচর কাটতে হলে প্রথমে হাইড্রোগ্রাফিক জরিপ করতে হয়। কিন্তু নদী থেকে যত্রতত্র শত শত ড্রেজার বসিয়ে অপরিকল্পিত বালু উত্তোলনের কারণে জাতীয় সম্পদ ইলিশ ক্ষতিগ্রস্ত, মাছের খাদ্য কমে যাওয়া, নদীভাঙন প্রতিরোধ করা সম্ভব হচ্ছে না বলে স¤প্রতি জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট দফতরের কর্মকর্তারা। এ নিয়ে একাধিক সংবাদও প্রকাশিত হয়েছে।
উল্লেখ্য, চাঁদপুরের নদী অঞ্চল থেকে গত কয়েক বছর ধরে অপরিকল্পিতভাবে বালু উত্তোলনের অভিযোগ রয়েছে ইউপি চেয়ারম্যান সেলিম খানসহ একটি চক্রের বিরুদ্ধে। এমনকি অনুমতি ছাড়াই চেয়ারম্যান বছরের পর বছর বালু বিক্রি করেছেন বলে জানিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন। দীর্ঘদিন বালু ব্যবসার মাধ্যমে বিপুল সম্পদের মালিক হয়েছেন।
বালু উত্তোলনের কারণে শত শত কোটি টাকা ব্যয় করেও নদীভাঙন প্রতিরোধ করা যাচ্ছে না। সেই সঙ্গে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে ইলিশ সম্পদসহ নদীর জীববৈচিত্র্য। সরকার হারাচ্ছে কোটি কোটি টাকার রাজস্ব। নদীভাঙন ঠেকাতে বিভিন্ন সময় সংশ্লিষ্ট সরকারি দফতর ও স্থানীয়রা বিরোধিতা করলেও বালু উত্তোলন বন্ধ হচ্ছে না।
এ অবস্থায় চাঁদপুরের নদী থেকে অপরিকল্পিত বালু উত্তোলন বন্ধে ভাঙনকবলিত মানুষ, জেলে ও জেলা আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন পর্যায়ের মানুষজনের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে গত ১৯ ফেব্রæয়ারি জেলা উন্নয়ন সমন্বয় সভায় বিআইডবিøউটিএ, মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট, পানি উন্নয়ন বোর্ডের শীর্ষ কর্মকর্তাদের মতামত ও চিঠির আলোকে সরকারি সম্পদ ও ইলিশ রক্ষায় ভূমি মন্ত্রণালয়, পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়, নদী রক্ষা কমিশসহ সংশ্লিষ্ট দফতরে চিঠি দেন জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশ।
ওই চিঠির পর পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়, মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট, মৎস্য অধিদফতর, বিআইডবিøউটিএ, পানি উন্নয়ন বোর্ড, চাঁদপুরের জেলা প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করে জাতীয় নদী রক্ষা কমিশন। উচ্চপর্যায়ের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে ভূমি মন্ত্রণালয়। এরই মধ্যে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন বন্ধ ও চেয়ারম্যান সেলিম খানকে গ্রেফতারের দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেছেন নদীপাড়ের ভাঙনকবলিত মানুষ।


এই বিভাগের আরও খবর