মোঃ আলমগীর হোসেন।।
হাইমচর উপজেলার ও চরাঞ্চলের অধিকাংশ মানুষই নদী পথে জেলা সদর, মুন্সিগঞ্জ ও ঢাকায় লঞ্চে যাতায়াত করেন। সকাল ৯টায় এবং রাত ৯টায় দু’টি লঞ্চ ঢাকার উদ্দেশ্যে উপজেলার সর্বশেষ ঘাট থেকে ছেড়ে যায়। কিন্তু এসব লঞ্চঘাটে পন্টুন ও যাত্রীদের বসার স্থান না থাকায় চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। বিগত ৬০ বছর এসব ঘাট ইজারা হলেও যাত্রী ও ব্যবসায়ীরা নূন্যতম সুবিধা থেকে বঞ্চিত। ঘাটগুলোতে পন্টুন স্থাপনের দাবী যাত্রী, ব্যবসায়ী ও ভুক্তভোগীদের।
সম্প্রতি এসব লঞ্চঘাট পরিদর্শন, যাত্রী ও ব্যবসায়ীদের সাথে আলাপ করে জানাগেছে, জেলা সদরের দক্ষিণে হাইমচর উপজেলা। এই উপজেলার ৬ ইউনিয়নের মধ্যে ৩টি মেঘনার পশ্চিম ও ৩টি পূর্ব পাড়ে। রাজধানীর সাথে যোগাযোগের সহজ মাধ্যম লঞ্চ। কর্মক্ষেত্রে এবং ব্যবসায়ীক কাজে ঢাকায় যেতে লঞ্চ ছাড়া বিকল্প বাহনে ভাড়া অতিরিক্ত। প্রতিদিন বিভিন্ন চরাঞ্চল থেকে ট্রলারে করে চরভৈরবী, হাইমচর, তেলির মোড় ও নয়াহাট লঞ্চঘাটে এসে লঞ্চে উঠেন যাত্রীরা। কিন্তু লঞ্চঘাটে পন্টুন ও বসার কোন স্থান না থাকায় ভোগান্তি হচ্ছে তাদের। মেঘনা পাড়ের ব্লক বাধের উপর দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে লঞ্চে উঠতে হয়। ব্যবসায়ীরা তাদের মালামাল নিয়ে পড়েন বেকায়দায়। অনেক সময় মূল্যবান মালপত্র নদীতে পড়ে যায়। শিশু ও বৃদ্ধ লোকজন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সিড়ি বেয়ে লঞ্চে উঠতে হয়। প্রায় দুর্ঘটনার শিকার হন যাত্রীরা।
ঢাকা রিভার্স ট্রান্সফোর্ট পরিচালিত বোগদাদিয়া-৯ লঞ্চের ম্যানেজার কবির হোসেন বলেন, ঢাকা থেকে হাইমচরের লঞ্চের লাইন চালু হয়েছে কমপক্ষে ৬০ বছর পূর্বে। কিন্তু এ পর্যন্ত এসব ঘাটে কোন পন্টুন আসে নাই। কেউ ব্যবস্থাও নিচ্ছেন না। যাত্রীদের উঠতে নামতে বহু কষ্ট হয়। আমাদের সামনে অনেক যাত্রী উঠতে গিয়ে পড়ে যায়। কিন্তু আমাদের কিছুই করার থাকে না। আমরা চাই খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে এসব ঘাটে পন্টুনের ব্যবস্থা করা হউক।
নয়ারহাট ঘাটের ইজারাদার মোঃ সোহরাব হোসেন টিটু জমদার বলেন, ৪টি লঞ্চঘাটের মধ্যে নয়াহাট লঞ্চঘাট ইজরা দিচ্ছেন বিআইডাব্লিউটিএ। বাকী চরভৈরবী, হাইমচর ও তেলিরমোড় ঘাট ইজারা দিচ্ছে উপজেলা প্রশাসন। সরকার রাজস্ব পেলেও গত কয়েক যুগ লঞ্চঘাটের নূন্যতম সুবিধা বঞ্চিত এই অঞ্চলের মানুষ।
একই ঘাটের ব্যবসায়ী শরীফ হোসেন গাজী ও আলম সরদার বলেন, নয়ারহাট ঘাটটি বিআইডাব্লিউটিএর আওতায়। কিন্তু এটিতেও পন্টুন নেই গত ১৩ থেকে ১৪ বছর। লঞ্চে উঠতে গিয়ে প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছেন। আমাদের মালপত্র লঞ্চ থেকে নামাতে গিয়ে নদীতে পড়ে যায় এবং দুর্ঘটনার শিকার হই। এই ভোগান্তি থেকে রক্ষায় দ্রুত পন্টুন ও বসার স্থান স্থাপন করা প্রয়োজন।
চাঁদপুর বন্দর ও পরিবহন কর্মকর্তা একেএম কায়সারুল ইসলাম বলেন, হাইমচরের লঞ্চঘাটগুলো পরিদর্শন করা হয়েছে। যাত্রীদের উঠতে নামতে কষ্ট হয়ে তা উপলব্দি হয়েছে। খুব শীগগীরই নয়াহাট ঘাটে পন্টুন স্থাপন করা হবে। বাকী ৩টি লঞ্চঘাট যেহেতু উপজেলার আওতাধীন। সেগুলো পক্রিয়ার জন্য উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যানের সাথে প্রাথমিক কথা হয়েছে। চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হলে এবং ঘাট ৩টি বিআইডাব্লিউটিএকে হস্তান্তর করা হলে পন্টুনের ব্যবস্থা করা হবে।