নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
সারাদেশের ন্যায় চাঁদপুরের হাইমচরে গত সপ্তাহ থেকে শুরু হওয়া দাবদাহে অতিষ্ঠ স্থানীয়রা। এমন পরিস্থিতিতে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ডায়রিয়া আক্রান্তদের মধ্যে শিশু ও বয়স্ক রোগীর সংখ্যাই বেশি।
হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, গত সাত দিনে প্রায় ৭৫জন ডায়রিয়া রোগী হাইমচর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিয়েছে।
মঙ্গলবার সন্ধ্যা পর্যন্ত উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ৩০ জন রোগী চিকিৎসাধীন রয়েছে। তাদের মধ্যে ডায়রিয়ায় আক্রান্তের সংখ্যা ১৪জন।
রোগীদের স্বজনরা জানান, হাইমচর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নানা সীমাবদ্ধতা থাকা সত্বেও রোগীদেরকে পর্যাপ্ত সেবা দিতে ডাক্তার নার্সরা যথেষ্ট সেবা দিয়ে যাচ্ছেন। তারা খুবই আন্তরিক। তারা নিজেদের জায়গা থেকে সর্বোচ্চ সেবা দেয়ার চেষ্টা করেন।
হাইমচর উপজেলার উত্তর আলগী গ্রামের বাসিন্দা সাজেদা বেগম তার ডায়রিয়া আক্রান্ত ৩ বছরের শিশু আঁখীকে হাসপাতালে ভর্তি করেছেন।
তিনি বলেন, ‘ছোট বাইচ্চাডারে দুই দিন ধইরা হাসপাতালে ভর্তি করছি। হেরে ওষুধ দিছে, আগের তে উন্নতি হইছে, কিন্তু এখনও হের ডায়রিয়া ভালো হইছে না।’
পুর্বচর কৃষ্ণপুর গ্রামের ফজল আহমেদ তার ডায়রিয়া আক্রান্ত বৃদ্ধ মা কে হাসপাতালে ভর্তি করিয়েছেন।
তিনি বলেন, আমার মা গত পরশু দিন থেকেই ডায়রিয়া আক্রান্ত। বাড়িতে প্রাথমিক চিকিৎসা নিলেও অবস্থার উন্নতি হয় না। কাল ইফতারের পরে মা খুবই অসুস্থ হয়ে পড়ে। হাসপাতালে আনার পর ডাক্তার মা কে ভর্তি করানোর পরামর্শ দেয়। বর্তমানে মা কিছুটা সুস্থ আছে। ধীরে ধীরে অবস্থার উন্নতি হচ্ছে।
হাইমচর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দায়িত্বরত চিকিৎসক বলেন, ‘অপরিষ্কার পানি ও খাবার, মায়েদের অসাবধানতা, ময়লামিশ্রিত হাত মুখে দেয়ার কারণে শিশুরা ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে শিশুদের পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখাসহ খাবারের বিষয়ে মায়েদের সাবধান হতে হবে।’ তাছাড়া, বয়স্কদের বেশি বেশি নিরাপদ পানি ও খাবার স্যালাইন গ্রহণ করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, বর্তমানে যে হারে রোগী বাড়ছে এটা সত্যিই উদ্বেগজনক। হাসপাতালে একটি সিটও খালি নেই। প্রতিনিয়ত রোগী বাড়ছে। চিকিৎসা দিতে ডাক্তার, নার্সসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে হিমশিম খেতে হচ্ছে।
তবে, ‘হাসপাতালে রোগীদের চিকিৎসায় কোনো ত্রুটি হচ্ছে না। আমরা রোগীদের সেবায় সব সময় নিয়োজিত।’