শিরোনাম:
মতলবে পাওনা টাকাকে কেন্দ্র করে ব্যবসায়ীকে কুপিয়ে জখম, মালামাল লুট মতলব দক্ষিণে পরিত্যক্ত রান্নাঘর থেকে মরদেহ উদ্ধার মতলব উত্তরে খেলাফত মজলিসের বিক্ষোভ মিছিল মতলব দক্ষিণে ভেটেরিনারি ফার্মেসীগুলোতে অভিযান, চাঁদপুরে সম্পত্তিগত বিরোধ : হাতুড়ির আঘাতে বড় ভাইয়ের মৃত্যু মতলবে সরকারি গাছ নিধন: বনবিভাগ-এলজিইডির দোষারোপে জনরোষ মতলব উত্তরে নিশ্চিন্তপুর ডিগ্রি কলেজে একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থীদের নবীনবরণ অনুষ্ঠিত মতলব সরকারি কলেজে নবীন শিক্ষার্থীদের ওরিয়েন্টেশন অনুষ্ঠিত আমিরা বাজার থেকে লতিফগঞ্জ সড়কের বেহাল দশা চাঁদপুর ২ আসনের বিএনপি নেতা তানভীর হুদার রাজনৈতিক প্রচারণায় ডিজিটাল যাত্রা, চালু করলেন অফিসিয়াল ওয়েবসাইট

নাগরিক নিরাপত্তায় ইসলামী দৃষ্টিকোণ

reporter / ৩৯০ ভিউ
আপডেট : মঙ্গলবার, ১৫ নভেম্বর, ২০২২

মাহবুব আলম প্রিয়ঃ
মুসলমান আরেকজন মুসলমানকে হত্যা করার শাস্তির কঠোর বিধান রয়েছে। পবিত্র কুরআনের  সূরা আন-নিসা, আয়াত: ৯২-৯৩ এর বানী হলো, ‘কোনো মুমিনের জন্য সমীচীন নয় যে সে অন্য মুমিনকে হত্যা করবে, অবশ্য ভুলবশত করে ফেললে অন্য কথা। আর কেউ স্বেচ্ছায় কোনো মুমিনকে হত্যা করলে তার শাস্তি জাহান্নাম, সেখানে সে চিরকাল অবস্থান করবে। আর আল্লাহ তার প্রতি ক্রুদ্ধ হয়েছেন ও তাকে অভিশপ্ত করেছেন এবং তার জন্য ভীষণ শাস্তি প্রস্তুত রেখেছেন।
অতএব মানুষ আমরা নগরে বাস করি। তাই আমরা নাগরিক। আর আমাদের নিরাপত্তা বিধানে আমাদের স্রষ্টা আল্লাহ এমন কঠোর বাণী দিয়েছেন। অথচ,
নাগরিক সমাজে অপহরণ, গুম, খুন, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, ফেতনা-ফাসাদ ও সন্ত্রাসবাদ চলছে, সর্বস্তরে অশান্তি ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হচ্ছে। এতে  আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির চরম ব্যাঘাত হচ্ছে।  সামাজিক কর্মকাণ্ডে জননিরাপত্তার দারুণভাবে প্রভাব পড়ছে।  যেসব বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারী বিভিন্ন স্থানে নানা পর্যায়ে সন্ত্রাস, গুপ্তহত্যা ও প্রকাশ্য দিবালোকে নরহত্যা, অপহরণ, গুম, খুন-খারাবিসহ ইসলামবিরোধী মানবতাবিবর্জিত ধ্বংসাত্মক পৈশাচিক কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছে, বাস্তবে তারা মনুষ্যত্ব ও বিবেকহীনই বটে। এসব অপহরণ, গুম, খুন, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, ফেতনা-ফাসাদ প্রতিরোধে ধর্মীয় নীতি-নৈতিকতার কথা প্রচারের ও বাস্তবায়নের বিকল্প দেখছি না।  কেননা, সমাজে ফেতনা-ফাসাদ, মানবিক বিপর্যয়, নিরাপত্তাহীনতা ও অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি করাকে হত্যার চেয়েও জঘন্যতম অপরাধ সাব্যস্ত করা হয়েছে। হাদিস শরিফে বর্ণিত আছে যে ‘দুনিয়া ধ্বংস করে দেওয়ার চেয়েও আল্লাহর কাছে ঘৃণিত কাজ হলো মানুষ হত্যা করা।’ (তিরমিজি)
 সুতরাং নাগরিক অধিকার ছাড়া কোনো মানুষ নিরাপদে জীবন যাপন করতে পারে না। যে সমাজে মানবাধিকারের লঙ্ঘন হয়, সে সমাজে আইনের শাসন নেই। জননিরাপত্তায় ব্যর্থ হলে শান্তিপ্রিয় যেকোনো মানুষের ওপরই কালো থাবা নেমে আসতে পারে। তাই দেশের জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থে মানবাধিকার সুরক্ষায় ও নিরাপদ জীবনযাত্রার পরিবেশ সৃষ্টিতে সমাজে নরহত্যার মতো জঘন্য অপরাধীদের আইনের আওতায় এনে ইসলামের ন্যায়বিচারের মাধ্যমে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদানের বিকল্প নেই।
আমাদের সমাজে নিরাপত্তা নিয়ে সবাই এখন কম-বেশি উদ্বিগ্ন। যে ভাবে ঢাকাসহ সারা দেশে গুম-খুন, ছিনতাই, ডাকাতিসহ সন্ত্রাসীকাণ্ড ঘটছে তাতে জনমনে গভীর আতঙ্ক বিরাজ করছে। সরকার, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর উচিত অতি দ্রুত জনমনের এ আতঙ্ক, ভীতি দূর করা। নিরাপত্তাহীনতার সংস্কৃতি গড়ে উঠলে সমাজ-রাষ্ট্রে এর ভয়াবহ নেতিবাচক প্রভাব পড়তে বাধ্য। যা সুষ্ঠ সমাজের অন্তরায়। সুষ্ঠ স্বাভাবিক জীবনের জন্য নাগরিক নিরাপত্তা সর্বাগ্রে জরুরী। মানুষ নির্বিঘ্নে, নিরুদ্বেগে কাজ করবে এমন পরিবেশই নিশ্চিত করতে হবে। সরকারের দায়িত্ব জননিরাপত্তা নিশ্চিত করা। কিন্তু দেখা যাচ্ছে, এর ব্যত্যয় ঘটছে খুব স্বাভাবিকভাবেই। প্রশ্ন একটি দায়িত্বশীল সরকারের আসলে ভূমিকা কি হওয়া উচিত? রাষ্ট্র পরিচালনায় সরকারকে অনেক ক্ষেত্রে কঠোর ভূমিকা পালন করতে হয়। বিশেষ করে সন্ত্রাসীদের ব্যাপারে সরকারের আপোষকামী মনোভাব ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। নিরাপত্তা নিশ্চিতে সরকারকে আন্তরিকভাবে সচেষ্ট হতে হবে যাতে মানুষের আস্তা বৃদ্ধি পায়। অপরাধ সংঘটনে কে বা কারা জড়িত তা খুঁজে বের করা এমন কোন কঠিন কাজ নয়। প্রয়োজন শুধু আন্তরিকতা। দলীয় সন্ত্রাসীদের পৃষ্ঠপোষকদের ব্যাপারেও হতে হবে কঠিন। সরকার ও রাজনৈতিক দলের কান্ডারিদের বুঝতে হবে সন্ত্রাসীদের দল নেই। তাদের পৃষ্ঠপোষক নেই। এ বিষয়টি জনমনে নিশ্চিত করতে হবে। সুশাসনের প্রথম শর্ত হওয়া জরুরি  জননিরাপত্তা বিষয়ে।
সমাজে চলা ফেরায় সব শ্রেণি পেশার লোকজন অনিরাপদ পরিবেশের জন্য আতঙ্কিত  হন। নাগরিক তার কর্মস্থলে যাতায়াতকালে সবচেয়ে বেশি অনিরাত্তায় থাকেন। সড়ক মহা সড়কে ঘাপটি মেরে বসে থাকা একদল হিংস্র কেউ আইন শৃঙ্খলা বাহীনির লোক পরিচয়ে অপহরণ করে সর্বস্ব লুটে নেয়। কেউ প্রকাশ্যে ছিনতাই করে। কেউ নানা ছলচাতুরীর মাধ্যমে নানাভাবে নাগরিকদের জিম্মি করে রাখে। এসব ছলচাতুরীর মাঝে রয়েছে খাদ্যে ভেজাল দেয়া, অজ্ঞান করে সব লুটে নেয়া, নারীবেশে ছিনতাই,  যাদু টোনাসহ টোটকা চিকিৎসার নামে প্রতারনা। তারচেয়ে ভয়াবহ এখন জালিয়াত চক্রের দৌড়াত্ম্য৷ যা ধ্বংস করতে প্রয়োজন মানবিক নাগরিক সমাজ৷ যারা নাগরিকদের সভ্যতার চাদরে আশ্রয় দানে সক্ষম হবেন।
লেখক- সাংবাদিক


এই বিভাগের আরও খবর