মতলব উত্তর প্রতিনিধিঃ
কোনো একটি এলাকার কোনো একটি কৃষিপণ্য চাষের পুরো প্রক্রিয়াকে যদি একই পদ্ধতির
আওতায় নিয়ে আসা হয়, তাহলে জমির আল বজায় রেখেও লাভজনকভাবে যন্ত্র ব্যবহার করা যেতে পারে।
বোরো চাষে এ রকমই একটি কার্যকরী উপায় বের করেছেন কৃষি বিজ্ঞানীরা এবং পদ্ধতিটির
নাম দিয়েছেন সমলয় চাষাবাদ।
চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলায় এ বছর পুরোপুরিভাবে যন্ত্রের ব্যবহারে সমলয় চাষের প্রকল্প
নিয়েছিল স্থানীয় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর। এতে বোরোর বাম্পার ফলন হওয়ায় কৃষকরা এখন
আনন্দিত।
জানা গেছে, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর উপজেলার গজরা ইউনিয়নের আমুয়াকান্দি গ্রামের দক্ষিণ মাঠে দেড়শ’ বিঘা জমি বাছাই করে স্থানীয় কৃষকদের নিয়ে চাষাবাদ করে। শুরুতে জমির
অনুপাতে হাইব্রিড জাতের ধানের বীজতলা তৈরি করা হয় ট্রেতে। পৌষ মাসের মাঝামাঝি থেকে
মাঘ মাসের এক সপ্তাহ পর্যন্ত জমি তৈরি, প্রয়োজনীয় সেচকাজ ও রোপণের কাজ সম্পন্ন হয়।
চাষাবাদ হয় কলের লাঙ্গলে এবং ট্রান্সপস্নান্টারের মাধ্যমে চারা রোপণ করা হয়। প্রকল্পটির আওতায়
কৃষকদের বিনামূল্যে সার দিয়েছিল কৃষি বিভাগ।
আমুয়াকান্দি গ্রামের কৃষক রফিকুল ইসলাম বলেন, সমলয় পদ্ধতিতে আমি ১৪ বিঘা জমিতে বোরো আবাদ করেছিলাম। অন্য বছরের তুলনায় জমিটিতে অনেক বেশি ফলন হয়েছে। এছাড়া হাইব্রিড জাতের ধান চাষে খরচ কম হওয়ায় মুনাফাও বেড়েছে।
কৃষক জয়নাল আবেদীন বলেন, শুরম্নতে এক সঙ্গে বেশি পরিমাণ জমিতে একই জাতের হাইব্রিড ধান যান্ত্রিক উপায়ে রোপণ করে সফলতা পাব কিনা এনিয়ে দ্বিধাদ্বন্দ্বে ছিলাম। কিন্তু ফসল ওঠানোর পর বুঝতে পারলাম শতভাগ যান্ত্রিক চাষাবাদের ফলে কম পরিশ্রম ও কম খরচে বেশি ফলন পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তিনি এ পদ্ধতিতে চাষাবাদ আরও বাড়ানোর জন্য কৃষি বিভাগের কাছে দাবি জানিয়েছেন।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোহাম্মদ সালাউদ্দিন বলেন, সমলয়ে চাষাবাদের ফলে ফলন ভালো হয়।
ট্রেতে বীজতলা তৈরির ফলে চারায় কোনো ইনজুরি হয় না, তাই দ্রম্নত ধানের গাছ বেড়ে ওঠে।
এছাড়া ট্রান্সপস্নান্টারের সাহায্যে রোপণের ফলে বীজ ও চারার অপচয় রোধ করা যায়। এতে উৎপাদন খরচ কম হয়। এতে সফলতা আসায় কৃষকরা উৎসাহী হয়েছেন।