তারেক রহমান তারুঃ
অনেক জল্পনা, কল্পনার অবসান ঘটিয়ে অনেকটা শান্তিপূর্ণ ভাবেই শেষ হলো ফরিদগঞ্জ ইউপি নির্বাচন। বিচ্ছিন্ন কিছু ঘটনা ঘটলেও সেটা নির্বাচনেে ফলাফলে প্রভাব পেলেনি। জনগনের রায় কে প্রভাবিত করেনি।
সাম্প্রতিক কালে নির্বাচন নিয়ে জনগনের মাঝে যে নেতিবাচক মনোভাব সেটিও এই নির্বাচনে ইতিবাচক হয়ে নির্বাচন কে সুন্দর করেছে।
নির্বাচনী ব্যবস্থা হলো সাংবিধানিক নিয়ম অনুসরণ করে জনগণের মতামত জানাবার ব্যবস্থা। ভোট একটি দেশের জনগনের অন্যতম গণতান্ত্রিক অধিকার। এর মাধ্যমে জনগণ কোনো ব্যক্তি ও রাজনৈতিক দলকে ক্ষমতায় আসার জন্য নির্বাচিত করে। বর্তমান বিশ্বে প্রচলিত নির্বাচনী ব্যবস্থায় গরিষ্ঠতামূলক শাসন, সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্বমুলক ব্যবস্থার উপস্থিতি দেখা যায়। এছাড়া গনতান্ত্রিক ব্যবস্থায় একক বিজয়ী ব্যবস্থা, বহু বিজয়ী ব্যবস্থা, পছন্দানুক্রম ব্যবস্থা, দলীয়-তালিকা আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব এবং অতিরিক্ত সদস্য ব্যবস্থারও প্রচলন দেখা যায়।স্বচ্ছ্বতা ও দায়বদ্ধতাকে গনতন্ত্রের একটা স্তম্ভ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এজন্য অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন রাজনৈতিক-গণতন্ত্রের একটি আবশ্যিক পূর্বশর্ত। যে ধরনের নির্বাচনী ব্যবস্থাই অনুসরণ করা হোক না কেন তাতে জনগণের অবাধ-ভোটাধিকার প্রয়োগ ও ভোটের মাধ্যমে জনগণের প্রকৃত ইচ্ছা ও মতামতের প্রতিফলন নিশ্চিত করা নির্বাচনের প্রাথমিক ও মৌলিক উপাদান।
নির্বাচনে জনগনের প্রকৃত ইচ্ছা ও মতামতের প্রতিফলনের বিষয়টি এবারে ফরিদগঞ্জ ইউপি নির্বাচনে অনেকাংশেই পূরন হয়েছে।
সাম্প্রতিক কালে নির্বাচন জনগণের রায় উপেক্ষিত থাকার একটা বদনাম ছড়িয়ে আছে। এই একই বদনামের কারনে প্রধান রাজনৈতিক বিরোধী শক্তি বি এন পি নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে না। বি এন পি নির্বাচনে অংশ না নিলেও তাদের নেতা কর্মীরা স্বতন্ত্র ভাবে নির্বাচনে অংশ নিয়েছে। অনেকে মনে করেন এটি বি এন পির কৌশলগত একটি বিজয়।
বি এন পির একাধিক প্রার্থী নির্বাচনে জয়লাভ করতে সক্ষম হয়েছে। জনগনের মধ্যে নির্বাচন সুষ্ঠ হওয়ার ব্যাপারে একটা শঙ্কা অনেকদিন ধরেই। নির্বাচনী ব্যবস্থার ত্রুটি, এই সরকারের প্রতি অনাস্থা, ভয়, ভীতির একটা লক্ষন মানুষের মাঝে বিরাজ করায় নির্বাচন নিয়ে মানুষের মাঝে একটা নেতিবাচক ভাবনা বিরাজ করছিলো।
ফরিদগঞ্জ ইউপি নির্বাচন সেক্ষেত্রে সকল নেতিবাচক ভাবনা কে উড়িয়ে দিয়ে গনতন্ত্রের জন্য হয়ে থাকবে সবুজ সংকেত। এই নির্বাচনে ১৩ টি ইউনিয়নেই মনে করা হচ্ছে জনগনের আশা আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটেছে। নির্বাচনের ফলাফল যদি দেখা হয়, ৮ জন স্বতন্ত্র প্রার্থী, ২ জন আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী, এবং ৩ জন নৌকা প্রতিকে জয় লাভ করেছে।
গতকাল (৫ ই জানুয়ারী) নির্বাচন কেন্দ্র গুলোতে ঘুরে মানুষের মাঝে স্বস্তির একটা ভাব লক্ষ্য করা গিয়েছে। রাস্তা দিয়ে হাটার সময় ও কান পাতলে শোনা গিয়েছে মানুষের ভোটাধিকার নির্বিঘ্নে প্রয়োগের খবর।
নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক এক পরাজিত প্রার্থী বলেন, এবার নির্বাচনে আমি হেরে গেলেও নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ করার সুযোগ নেই। প্রশাসন যথেষ্ঠ সচেতন ছিলো এবং নির্বাচন ও যথেষ্ট সুষ্ঠ হয়েছে। জনগনের রায় কে মেনে নিতে হবে।
নির্বাচন নিয়ে মানুষের মনে যে কালো মেঘের ঘনঘটা সেটি যেন অনেকাংশেই দূর করলো এবারের ফরিদগঞ্জ ইউপি নির্বাচন। প্রার্থী থেকে ভোটার সকলের মাঝে গনতান্ত্রিক মনোভাব লক্ষনীয় ছিলো।
সুষ্ঠ নির্বাচন গনতন্ত্রের মূল বাহন।
সেক্ষেত্রে ফরিদগঞ্জ ইউপি নির্বাচন গনতন্ত্রের জন্য সবুজ সংকেত।