নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলা সাহিত্য পরিষদের উদ্যোগে মতলব মুক্ত দিবস উপলক্ষে ৬ গুণীকে সম্মাননা স্মারক ও ২০জন বীর মুক্তিযোদ্ধাকে ক্রেস্ট প্রদান করা হয়েছে। গতকাল ৪ঠা ডিসেম্বর রোববার বিকেলে মতলব উত্তর প্রেসক্লাবে অনুষ্ঠিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সিলেট এমসি কলেজের অধ্যাপক সরকার আবদুল মান্নান। প্রধান আলোচক ছিলেন চাঁদপুর জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডের সাবেক কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা মিয়া মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম।
মতলব উত্তর সাহিত্য পরিষদের সভাপতি কবি আশিকুর রহমানের সভাপতিত্বে ও মহাপরিচালক কবি নূূর মোহাম্মদের পরিচালনায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন-বাংলা একাডেমির পুরস্কার প্রাপ্ত কথাসাহিত্যক রফিকুর রশীদ, গল্পকার ও টিভি উপস্থাপক মনি হায়দার, মতলব উত্তর প্রেসক্লাবের সভাপতি ও প্রিয় চাঁদপুর পত্রিকার সম্পাদক ও প্রকাশক বোরহান উদ্দিন ডালিম, মতলব উত্তর সাহিত্য পরিষদের উপদেষ্ঠা চাঁদপুর অনলাইন প্রেসক্লাবের সভাপতি ও ক্রাইম এ্যাকশনের সম্পাদক ও প্রকাশক বিপ্লব সরকার, মতলব উত্তর উপজেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি গোলাম নবী খোকন, মতলব উত্তর সাহিত্য পরিষদের পরিচালক মাঈন উদ্দিন চৌধুরীর প্রমুখ।
গুণীজনদের মধ্য থেকে বক্তব্য রাখেন, চাঁদপুর জেলা অতিরিক্ত দায়রা জজ আদালতের এপিপি এ্যাডভোকেট জসিম উদ্দিন, কেন্দ্রীয় কৃষকলীগের সহ-স্থানীয় সরকার বিষয়ক সম্পাদক সামিউল বাসির বিন হোসেন, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি জহিরুল ইসলাম চৌধুরী।
বক্তারা বলেন, ৪ ডিসেম্বর মতলব মুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে দখলদার হানাদর পাকিস্তানী বাহিনী মতলবের মাটি থেকে বিতারিত হয় এবং মতলব স্বাধীন হয়। ৭১ সালের ৮ এপ্রিল ঢাকা থেকে সড়কপথে পাকবাহিনী মতলবে আসে এবং থানা দখল করে তাদের ক্যাম্প স্থাপন করে। তারা মতলবে নির্বিচারে সাধারণ মানুষ হত্যা করে এবং ব্যাপক হত্যাযজ্ঞ চালায়।
যুদ্ধকালীন সময়ে পাকিস্তানী সৈন্য ও তার এদেশীয় দোসররা এনায়েতনগর গ্রামে পাঁচ হাজার ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দেয় এবং বহু নারীর সম্ভ্রম কেড়ে নিয়েছিল। তখন মুক্তিযোদ্ধাদের সাহসিকতায় মতলবরে খিদিরপুর, বহুরী, বাগানবাড়ি, মোহনপুর ও এনায়েতনগর এলাকার পাঁচটি ঘাঁটি তৈরী করে হানাদার বাহিনী মোকাবেলা করে। স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধারা দখলদার পাকবাহিনীর বিরুদ্ধে লালারহাট, বোয়ালমারী এবং আরও কয়েকটি স্থানে সম্মুখ যুদ্ধে অংশ নেয়। মুক্তিযোদ্ধাদের সাথে সর্বস্তরের জনগণের প্রবল প্রতিরোধের মুখে অবশেষে ৪ ডিসেম্বর পাক হানাদার বাহিনী নদীপথে মতলব ছাড়তে বাধ্য হয়। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন মতলবের ১৮ জন মুক্তিযোদ্ধা নিহত হন।
পরে সাহিত্য, শিক্ষা, মানবাধিকার, সমাজসেবা, ক্রীড়া ও কৃষি ক্ষেত্রে বিশেষ অবদান রাখায় সিলেট এমসি কলেজের অধ্যাপক সরকার আবদুল মান্নান, চাঁদপুর গনি মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আব্বাসউদ্দীন, জেলা পরিষদের সদস্য ও মেঘনা ধনাগোদা পানি ব্যবস্থাপনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক সরকার মো. আলাউদ্দিন, এ্যাড. জসিম উদ্দিন, জহিরুল ইসলাম চৌধুরী, সামিউল বাসির বিন হোসেনকে সম্মাননা স্মারক প্রদান করা হয়।