এ উপলক্ষে আজ বুধবার
সকাল সাতটায় মরহুমের কবরে ফাতেহা পাঠ ও দোয়ার মধ্য দিয়ে দিনের কর্মসূচি শুরু হবে। পুরাণবাজারের বাড়িতে কোরআন তেলাওয়াত এবং বাদ আসর সকল মসজিদে তাদের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করে দোয়া অনুষ্ঠিত হবে। সকল স্তরের নেতা কর্মী, শুভাকাঙ্ক্ষী, সর্বোদয় বন্ধুবান্ধব, আত্মীয়-স্বজনসহ সর্বস্তরের জনসাধারণকে উক্ত দোয়ায় অংশগ্রহণ করে তাদের বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করে তাদের জন্য আল্লাহ্ পাক তাদের জীবদ্দশার সমস্ত ভুল ত্রুটি মাফ করে জান্নাতুল ফেরদাউস নসিব করেন, আমিন।
বাদ আছর চাঁদপুর শহরের পুরাণবাজার মিজান চৌধুরী বাড়ির বাইতুল হাফিজ জামে মসজিদে মিজানুর রহমান চৌধুরী, তাঁর স্ত্রী সাজেদা মিজান ও জ্যেষ্ঠ পুত্র দীপু চৌধুরীর রুহের মাগফেরাত কামনায় মিলাদ ও দোয়া অনুষ্ঠিত হবে। মরহুমের মেজো ছেলে ও চাঁদপুর জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আমানুল্লাহ মিজান রাজু চৌধুরী বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও প্রবীণ রাজনীতিবিদ, মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক মিজানুর রহমান চৌধুরী ১৯২৮ সালের ১৯ অক্টোবর চাঁদপুর জেলার পুরাণবাজারস্থ পূর্ব শ্রীরামদী গ্রামে এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা মরহুম মোঃ হাফিজ চৌধুরী এবং মাতা মরহুমা মোসাম্মৎ মাহমুদা বেগম।
কলেজ থেকেই তিনি ছাত্র রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত ছিলেন। ১৯৬২ সালে তিনি আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৬২ থেকে ১৯৬৯ পর্যন্ত পাকিস্তান জাতীয় পরিষদের সদস্য ছিলেন। যখন শেখ মুজিবুর রহমান এবং আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ কারাগারে ছিলেন তখন তিনি দলের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দাযয়িত্ব পালন করে। ১৯৬৭ সালে তিনি নিজেও গ্রেফতার হন।
আইয়ুব খানের বিরুদ্ধে আন্দোলনের সময় তিনি সম্মিলিত বিরোধী দলের অন্যতম সংগঠক ছিলেন। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে তিনি সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন। ১৯৭০-এর নির্বাচনে তিনি পাকিস্তান জাতীয় পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন। স্বাধীন বাংলাদেশে ১৯৭৩-এর সংসদেও তিনি সংসদ সদস্য ছিলেন। ১৯৭৩ সালে বঙ্গবন্ধ শেখ মুজিবুর রহমানের মন্ত্রী সভায় তিনি তথ্য মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে ছিলেন।
১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধু সপরিবারে নিহত হলে আবদুল মালেক উকিল এবং মিজানুর রহমান চৌধুরীর নেতৃত্বে আওয়ামী লীগের দুটি পৃথক ধারার সৃষ্টি হয়। আশির দশকের শুরু দিকে মিজানুর রহমান চৌধুরী হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদের সামরিক সরকারকে সমর্থন দেন এবং ১৯৮৪ সালে তিনি জাতীয় পার্টিতে যোগ দেন।
এরশাদের আমলে ১৯৮৬ সালের ৯ জুলাই থেকে ১৯৮৮ সালের ২৭ মার্চ পর্যন্ত তিনি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৮৮ সালের মার্চ মাসের শেষের দিকে মওদুদ আহমেদ তাঁর স্থলে প্রধানমন্ত্রী হন। ১৯৯০ সালে এরশাদ ক্ষমতা ছেড়ে দিলে তাকে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়।
এরশাদ জেলে থাকাকালীন মিজানুর রহমান চৌধুরী জাতীয় পার্টির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেন। ২০০১ সালে মিজানুর রহমান পুনরায় আওয়ামী লীগে যোগ দেন এবং মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তিনি আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা ছিলেন। ২০০৬ সালের ২ ফেব্রুয়ারী তিনি মৃত্যুবরণ করেন।