সারাদেশ বাসী সহ বিশ্ববাসীর চোখ এখন পদ্মা সেতু উদ্বোধনী অনুষ্ঠান দেখার অপেক্ষায়। সারাদেশে প্রতিটি জেলা উপজেলায় স্যাটেলাইটের মাধ্যমে পদ্মা সেতু উদ্বোধনী অনুষ্ঠান উপভোগ করবে। আসলেই যোগ্য পিতার যোগ্য উত্তরসুরী হলেন শেখ হাসিনা। আন্তর্জাতিক সকল ষড়যন্ত্র এবং বাধা বিপত্তি পেরিয়ে পদ্মা নিজেদের টাকায় পদ্মা সেতু নির্মাণ করে তিনি বিশ্ব বাসী কে তাক লাগিয়ে দেন।তিনি অত্যন্ত সাহসীকতার সঙ্গে পদ্মা সেতু নির্মাণ করেন।
আজ ২৫ জুন বাংলাদেশের জন্য এক গৌরবোজ্জ্বল ঐতিহাসিক দিন। কারণ, এ দিন প্রমত্তা পদ্মা নদীর ওপর নির্মিত দেশের সর্ববৃহৎ পদ্মা সেতু উদ্বোধন হতে যাচ্ছে। বাংলাদেশ নিজস্ব অর্থায়নে সেতু নির্মাণ করতে পেরেছে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেশপ্রেম ও দৃঢ়তার কারণে। সাথে ছিল দেশবাসীর অকুণ্ঠ সমর্থন ও সহযোগিতা। তবে দেশী-বিদেশী কিছু কুলাঙ্গার এই সেতু নির্মাণ আটকে দিতে ষড়যন্ত্রও করেছিল। তারা ব্যর্থ হয়েছে।
যেভাবে শুরু: ১৯৯৮ থেকে ২০০০ সাল পর্যন্ত প্রাক-সম্ভাব্যতা যাচাই শুরু হয়। এরপর ২০০১ সালে জাপানিদের সহায়তায় সম্ভাব্যতা যাচাই হয়। ২০০৪ সালের জুলাই মাসে জাপানের আন্তর্জাতিক সহায়তা সংস্থা জাইকার সুপারিশ মেনে মাওয়া-জাজিরার মধ্যে পদ্মা সেতু নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। ২০০৮ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকার পদ্মা সেতুর নকশা প্রণয়নে পরামর্শক প্রতিষ্ঠান চূড়ান্ত করে। মহাজোট সরকার শপথ নিয়েই তাদের নিয়োগ দেয়। ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার সেতু করার চূড়ান্ত নকশা করা হয়।
একনেক সভায় অনুমোদন: ২০০৭ সালে ১০ হাজার ১৬১ কোটি ৭৫ লাখ টাকা ব্যয়ে পদ্মা বহুমুখী সেতু প্রকল্প একনেক সভায় অনুমোদন পায়। পরে নকশা পরিবর্তন হয়ে দৈর্ঘ্য বেড়ে যাওয়ায় নির্মাণ ব্যয়ও বাড়ে। ২০১১ সালে ২০ হাজার ৫০৭ কোটি ২০ লাখ টাকার সংশোধিত প্রকল্প একনেকে অনুমোদন পায়। ২০১৬ সালে আবারও আট হাজার ২৮৬ কোটি টাকা ব্যয় বাড়ালে মোট ব্যয় দাঁড়ায় ২৮ হাজার ৭৯৩ কোটি ৩৯ লাখ টাকা। সবশেষ প্রকল্পের মোট ব্যয় ৩০ হাজার ১৯৩ কোটি ৩৮ লাখ ৭৬ হাজার টাকায় দাঁড়িয়েছে। এর পুরো টাকাই সরকারি অর্থায়ন।
প্রকল্পের মেয়াদ: ১ জানুয়ারি ২০০৯ থেকে ৩০ জুন ২০২৩।
পদ্মা সেতু থেকে বিশ্বব্যাংকের সরে যাওয়া: পদ্মা সেতু নির্মাণে ১২০ কোটি ডলারের ঋণ অঙ্গীকার করেছিল বিশ্বব্যাংক। কিন্তু অনিয়মের অভিযোগ তুলে এই অঙ্গীকার থেকে সংস্থাটি সরে যায়। এ ধরনের কাজের শর্ত অনুযায়ী মূল ঋণদাতা চলে গেলে চলে যায় অন্যরাও। কাজেই একে একে এডিবি, জাইকা ও আইডিবিও চলে যায়। এরপর নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণের ঘোষণা দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
আজ ২৫ জুন আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন হতে যাচ্ছে স্বপ্নের পদ্মা সেতু। বহু কাংখিত এ সেতুর সফল বাস্তবায়ন দেশের দক্ষিণাঞ্চলসহ সাড়াদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের গতিধারা আরো অনেক বেগবান করবে। পদ্মা সেতু আমাদের সম্মান, সক্ষমতা, গৌরব, গর্ব ও ঐতিহ্যের প্রতীক। এটি দেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি বাড়াতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখবে। এর মধ্য দিয়ে বঙ্গবন্ধুর সুখী, সমৃদ্ধশালী স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ার লক্ষ্যে আরো অনেক ধাপ এগিয়ে গেল বাংলাদেশ। টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার ১৭ টি লক্ষ্য অর্জন, অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা, ভিশন ২০৩০, ডেল্টা প্লান ইত্যাদির বাস্তবায়ন কেবল সময়ের ব্যাপার মাত্র। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সুযোগ্য নেতৃত্বে বাংলাদেশ সর্বক্ষেত্রে সফলতার মাধ্যমে বিশ্বের দরবারে এখন উন্নয়নের রোল মডেল। ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ উন্নত দেশ হিসেবে বিশ্বের বুকে মাথা উঁচু করে দাঁড়াবে, ইনশাআল্লাহ। ধন্যবাদ, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা কে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করছি।