রিয়ন দে/ মোঃ আলমগীর হোসেনঃ চাঁদপুরের পদ্মা-মেঘনা নদীতে জেলেদের জালে ধরা পড়ছে না কাঙ্খিত ইলিশ। এতে পরিবার, পরিজন ও কিস্তির টাকা নিয়ে নানা সমস্যায় জর্জরিত অসহায় জেলেরা। তবে পানি প্রবাহ বৃদ্ধি ও প্রবল ধারায় বৃষ্টি পাত হলে নদীতে ইলিশ মাছ বৃদ্ধির প্রত্যাশ্যা মৎস্য কর্মকর্তাদের।
২৯ আগস্ট সোমবার দিনব্যাপী হাইমচরের চরভৌরবী, সদরের হরিনাঘাট, লক্ষিপুরের বহরিয়া, পুরানবাজারের রোনাগোয়ালসহ বিভিন্ন স্থান ঘুরে জেলেদের জালে তেমন কোন ইলিশ ধরা পড়তে দেখা যায়নি।
জানা যায়, বছরের জুন, জুলাই ও আগস্ট মাসের বর্ষাকালে ইলিশের ভরা মৌসুম। তাই অধিকাংশ জেলেরা ধারদেনা করে জাল, জ্বালানি, লোকবল, নৌকা ও সরঞ্জামাদি নিয়ে নেমে পড়ে নদীতে। অথচ ভরা মৌসুম হলেও চাঁদপুরের পদ্মা-মেঘনা নদীতে জেলেদের জালে মিলছে না কাঙ্খিত ইলিশ। যে পরিমাণ ইলিশ পায় তা আবার আকারে ছোট এবং পরিমাণের কম হওয়ায় জেলেদের জ্বালানি খরচও উঠে আসে না। এতে জেলেরা ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়ছে। পোহাতে হচ্ছে পরিবার-পরিজন নিয়ে নানা সমস্যা। তাই সরকারের কাছে দ্রুত বিকল্প কর্মসংস্থানের দাবি অসহায় জেলেদের।
চাঁদপুর জেলা আওয়ামী মৎস্যজীবী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোঃ মানিক দেওয়ানসহ জেলেরা বলেন, আমরা এক একটা জেলে নৌকায় ১০-১২ জন করে নদীতে জাল নিয়ে নামি। সারাদিন জাল বেয়ে ২ হাজার টাকারও ইলিশ পাই না। যেই ইলিশ পাই তা বিক্রি করে আমাদের খরছ ত উঠবে দূরে থাক বরং নৌকার তেল খরছও উঠেনা। আমরা খুব কষ্টে দিনাতিপাত করছি যা দেখার কেউ নেই। তারা আরও বলেন, ২২ দিনের অভিযান ও মা ইলিশের অভিযান ছাড়াও নদীতে নামলে প্রায়ই হয়রানি হতে হয়। সরকারের কাছে দাবী, মাছই যখন নদীতে নাই। তাহলে আর আমাদের হয়রানি করে কি লাভ। বরং আমাদের বিকল্প কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করে দিক আমরা আর নদীতে জাল ফেলবো না।
এ বিষয়ে চাঁদপুর জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোঃ গোলাম মেহেদী হাসান বলেন, জেলেদের হতাশ হওয়ার প্রয়োজন নেই। নদীতে পানি প্রবাহ বৃদ্ধি ও প্রবল ধারায় বৃষ্টিপাত হলে জেলেদের জালে প্রচুর পরিমাণে ইলিশ ধরা পরবে বলে আশা করছি। তাছাড়া আমাদের চাঁদপুর জেলায় ৪৪ হাজার ৩৫ জন নিবন্ধিত জেলে রয়েছে। যাদেরকে অভিযান সময়ে বিকল্প কর্মসংস্থানের অংশ হিসেবে বিভিন্ন প্রকল্পে চাল, গবাদি পশু, সেলাই মেশিন, ভ্যান গাড়ী দিয়ে থাকি। এরমধ্যে মৃত এবং অপেশাদার জেলেদের চিহ্নিত করে তাদের বাদ দিয়ে আমরা প্রকৃত পেশাদার জেলেদের হালনাগাদ করে সরকারি সুযোগ সুবিধার আওতায় আনার কার্যক্রম চলমান রেখেছি।