সাইফুর রহমান সবুজঃ
চাঁদপুরের মতলব দক্ষিণ উপজেলার আলোচিত আদিবা হত্যা মামলার প্রধান আসামী ইমনের বসতঘর পুড়িয়ে দিয়েছে বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী।
শুক্রবার (২৪ জানুয়ারি) বিকালে নিহত স্কুল শিক্ষার্থী আদিবা ইসলামের শোকে ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ হিসেবে ইমনের বসতঘর পুড়িয়ে দেয় বলে জানান এলাকাবাসী। এতে তাদের একটি সেমিপাকা বসত ঘরসহ ঘরে থাকা আসবাবপত্র পুড়ে ছাই হয়ে যায়।
প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় এলাকাবাসি জানান, শুক্রবার বিকালে উপজেলার পাঁচদোনা ও আশপাশের এলাকার লোকজন আদিবা হত্যা মামলার প্রধান আসামী ইমনের বাড়িতে যান। এ সময় ওই বাড়িতে ইমনের পরিবারের কোন সদস্য উপস্থিত ছিলেন না। পরে উত্তেজিত এলাকাবাসী ইমনের সেমিপাকা বসতঘরে আগুন জ্বালিয়ে দেয়। এতে ওই বসতঘরের চারটি কক্ষ, আসবাবপত্রসহ গুরুত্বপূর্ণ অন্যান্য জিনিসপত্র পুড়ে যায়। খবর পেয়ে স্থানীয় ফায়ার সার্ভিস বিভাগের লোকজন গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন।
এ ব্যাপারে আদিবা হত্যা মামলার প্রধান আসামি ইমনের বাবা মজিবুর রহমানের মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে সংযোগ বন্ধ পাওয়া যায়। স্থানীয় এলাকাবাসী জানায়, আদিবা হত্যাকান্ডের পর ইমনের পরিবারের লোকজন গাঁ-ঢাকা দিয়েছে।
জানা যায়, উপজেলার নায়েরগাঁও উত্তর ইউনিয়নের পাঁচদোনা গ্রামের প্রবাসী আলাউদ্দিন বেপারীর ৩য় শ্রেণির স্কুল পড়–য়া মেয়ে আদিবা ইসলাম (৮) গত ২০ জানুয়ারি বিকাল ৪টার দিকে নিজ বাড়ির সামনে খেলা করতে গিয়ে নিখোঁজ হয়। আদিবার সহপাঠী তাসফিয়ার তথ্য মতে, গোলাপ ফুল দেওয়ার কথা বলে একই এলাকার ইমন নামের এক যুবক আদিবাকে নিয়ে যায়। সেই সূত্র ধরে আদিবার মা মতলব দক্ষিণ থানায় একটি অপহরণ মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় পুলিশ মুজিবুর রহমানের ছেলে ইমন ও লিটন সরকারের ছেলে ইয়াসিন সরকারকে গ্রেপ্তার করে জেলহাজতে পাঠায়। পুলিশ দুজনকে গ্রেপ্তার করলেও আদিবার সন্ধান দিতে না পারায় গেল বৃহস্পতিবার এলাকায় মানববন্ধন ও সড়ক অবরোধ করে এলাকাবাসী। পরে থানা পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা এসে এলাকার বিভিন্ন পুকুর ও নির্জন স্থানে আদিবাকে খুঁজতে গিয়ে আজিজ প্রধানীয়া বাড়ির পুকুর পাড়ে খড় (গোখাদ্য) দিয়ে ঢেকে রাখা অবস্থায় আদিবার লাশ উদ্ধার করে। তারই ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ হিসেবে ইমনের বাড়ি জালিয়ে দেয় বলে জানান এলাকাবাসী।
মতলব দক্ষিণ থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ সালেহ্ আহাম্মদ জানান, আমরা দু’জন আসামীকে গ্রেফতার করে জেল হাজতে প্রেরন করেছি। প্রথমে অপহরণ মামলা হিসেবে রেকর্ড করি। আদিবার লাশ উদ্ধারের পর এটি হত্যা মামলায় রূপান্তর হয়ে যায়। মামলার অগ্রগতি সম্পর্কে তিনি বলেন, বিষয়টি সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে আমাদের তদন্ত টিম কাজ করছে। এছাড়া আসামীদের রিমান্ডের আবেদন করা হয়েছে। শুনানি শেষে রিমান্ড মঞ্জুর হলে আমরা আরো তথ্য জানতে পারবো। আসামীর বাড়ি জ্বালিয়ে দেয়া সম্পর্কে তিনি বলেন, ঘটনাটি জেনে সেখানে পুলিশ পাঠিয়েছি। তবে এ ঘটনায় থানায় কোনো অভিযোগ বা মামলা হয়নি