নিজস্ব প্রতিবেদকঃ চাঁদপুর জেলা আইন-শৃংখলা কমিটির মাসিক সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সভায় সভাপতিত্ব করেন জেলা প্রশাসক ও বিজ্ঞ জেলা ম্যাজিস্ট্রেট অঞ্জনা খান মজলিস। সভায় জেলার বিদ্যমান আইন-শৃংখলা পরিস্থিতি পর্যালোচনার পাশাপাশি মাদক ও চোরাচালান নিয়ন্ত্রণ, মাহে রমজান উপলক্ষে দ্রব্যমুল্য স্থিতিশীল রাখতে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা, আদালতের মামলা সমূহ দ্রুত নিষ্পত্তিকরণ, পহেলা বৈশাখা উদযাপন, পবিত্র ঈদুল ফিতর উদযাপন, কিশোর গ্যাং প্রতিরোধ, ফেইসবুকে অপপ্রচার ও গুজব বন্ধে ব্যবস্থা, চাঁদপুর শহরের সড়কে জানজট নিরসনসহ গুরতর অপরাধ দমনে কর্মকৌশল প্রনয়ণ করা হয় এবং সংশ্লিষ্ট সকলকে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য নির্দেশনা প্রদান করা হয়।
এছাড়া চাঁদপুরের নদী থেকে অপরিকল্পিত ও অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধের বিষয়টি অনেক বড় অর্জন বলে উল্লেখ করা হয়। তবে নদীতে চাঁদাবাজি যেন না হয় তার জন্য ব্যবস্থা নিতে নৌপুলিশকে নির্দেশনা দেয়া হয়। কারণ, অভিযোগ আছে, লাইটার জাহাজগুলোতে চাঁদাবাজি করে দুর্বৃত্তরা।
গতকাল ১০ এপ্রিল সকাল ১১টায় জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত এ সভায় বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের কর্মকর্তা, জনপ্রতিনিধি, রাজনীতিকরা অংশগ্রহণ করেন।
সভায় জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবু নঈম পাটওয়ারী দুলাল বলেন, আমরা সবাইকে সহযোগিতা করতে চাই। কিছু কিছু জায়গায় কিশোর গ্যাং দেখা যাচ্ছে। এই কিশোর গ্যাং থেকে আমাদের রক্ষা করতে হবে।
জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি নাছির উদ্দিন আহমেদ বলেন, আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা দেশের উন্নয়নের জন্য অক্লান্ত পরিশ্রম করছেন। এ কারণে বাংলাদেশ এখন উন্নয়নের মহাসড়কে।
তিনি আরও বলেন, আমাদের সরকার ঘোষণা করেছে দুর্নীতি, মাদক, সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স। দুর্নীতি একটি দেশের উন্নয়ন-অগ্রগতির অন্তরায়। দুর্নীতি একটি দেশকে ধ্বংস করে দেয়।
আমাদের সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে আমরা একটি ঠিকানা পেয়েছি। আমাদের উদ্দেশ্য ছিল বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ। প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতায় আসার পর মানুষ স্বাধীনতার সুফল ভোগ করছে।
তবে কিছু কিছু দুর্নীতির চিত্র পাওয়া গেছে। যা কোন অবস্থাতেই কাম্য নয়। এগুলো বন্ধ করতে হবে। চাঁদপুরে আগে চেয়ে মাদক বেড়েছে। তাদের বিরুদ্ধে আরও কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুদিপ্ত রায় বলেন, মাদক বিক্রেতাদের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত আছে। বর্তমান সময়ে মাদক উদ্ধার বেড়েছে। ঈদের সময়ে প্রতি বছর মার্কেটগুলোতে মানুষ চলাচলের জন্য যেভাবে নিরাপত্তা দেয়া হতো এবারও তা অব্যাহত থাকবে। আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণের জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণ ফোর্স নিয়োগ করা হবে।
জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশ বলেন, দ্রব্যমূল্যের উদ্ধগতি নিয়ে বিভিন্ন মাধ্যমে গুজব রটানো হয়েছে। এগুলো প্রতিহত করতে হবে। তিনি বলেন, আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী স্বল্প আয়ের মানুষের জন্য স্বল্পমূল্যে টিসিবির পণ্য ১ কোটি মানুষকে দেয়ার ঘোষণা দিলেন। আর তা বাস্তবায়নের জন্য জেলা প্রশাসনকে দায়িত্ব দিয়েছেন। টিসিবির ডিলাররা পণ্যগুলো বিক্রি করবে কিন্তু কাজটি করবে জেলা প্রশাসন।
তিনি আরও বলেন, নদী রক্ষা কমিশনের নির্দেশনা অনুযায়ী নদী থেকে যত্রতত্র বালু উত্তোলন বন্ধ করা হয়েছে। জেলা প্রশাসন, নৌপুলিশ, কোস্টগার্ড মিলে আমরা এগুলো বন্ধ করেছি। তবে যখন এই বেআইনি কাজগুলো বন্ধ হয়েছে এই সুযোগে কেউ যেন আবার চাঁদাবাজি না করতে পারে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।
সভায় উপস্থিত ছিলেন যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা এম এ ওয়াদুদ, পৌর মেয়র মো. জিল্লুর রহমান জুয়েলসহ আরও অনেকে।