শিরোনাম:
বিদ্যালয়ে পিয়ন থাকলেও শিশু শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যঝুঁকিতে ফেলে মাঠ পরিস্কার করাচ্ছেন প্রধান শিক্ষক ফরিদগঞ্জে ইংলিশ ডোরের উদ্বোধন ফরিদগঞ্জে ফারিসা’র নয়া কমিটি সভাপতি মোতাহার হোসেন, সম্পাদক মহেশ শর্মা চাঁদপুরে এসএ টিভির প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী পালন চাঁদপুরে জিয়াউর রহমানের জন্মবার্ষিকীতে আলোচনা সভা অসহায় শীতার্ত মানুষদের শীতবস্ত্র উপহার দিল চাঁদপুর চেম্বার অব কমার্স মতলব উত্তরে সাজাপ্রাপ্ত ২ আসামী গ্রেফতার ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলায় বিক্রি বাড়াতে খুশি ক্ষূদ্র উদ্যোক্তারা রূপগঞ্জে যুবলীগ নেতাকে গ্রেফতারের দাবিতে এলাকাবাসীর মানববন্ধন ও বিক্ষোভ নাজিরপাড়া ক্রীড়া চক্রের অভিষেক ও পরিচিতি সভা

চাঁদপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূমি অধিগ্রহণ সম্পর্কে টেলিভিশনে অসত্য বক্তব্য দেওয়ায়  সেলিম খানকে সতর্ক করলো জেলা প্রশাসন

reporter / ১১৬ ভিউ
আপডেট : শনিবার, ২৬ ফেব্রুয়ারী, ২০২২

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
চাঁদপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূমি অধিগ্রহণ সম্পর্কে অসত্য ও বিভ্রান্তিমূলক তথ্য উপস্থাপন করায় ল²ীপুর মডেল ইউপি চেয়ারম্যান সেলিম খানকে সতর্ক করেছেন জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট অঞ্জনা খান মজলিশ। এ বিষয়ে জেলা প্রশাসকের কারণ দর্শানোর নোটিশ থেকে অব্যাহতির আবেদনের প্রেক্ষিতে ভবিষ্যতে দায়িত্বের সাথে কথা ও কাজ করার নির্দেশ দেয়া হয়।
জেলা প্রশাসক স্বাক্ষরিত ওই চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, চাঁদপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূমি অধিগ্রহণ সম্পর্কে মাই টিভিতে প্রদত্ত বক্তব্য সম্পর্কে সেলিম খানকে কারণ দর্শানো নোটিশ প্রদান করা হয়। এর প্রেক্ষিতে সেলিম খানের জবাবের আলোকে তাকে সতর্ক করা হলো। ভবিষ্যতে দায়িত্বের সাথে কথা ও কাজ করার জন্য বলা হয়েছে। অন্যথায় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
জেলা প্রশাসক বলেন, চাঁদপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূমি অধিগ্রহণ সম্পর্কে অসত্য ও বিভ্রান্তিমূলক তথ্য উপস্থাপন করায় শোকজের জবাব দিয়েছেন চেয়ারম্যান সেলিম খান। তার বক্তব্য, আমরা ভূমি মন্ত্রণালয়ে যে রিপোর্ট দিয়েছিলাম অর্থাৎ সকল দলিল বিবেচনায় নিলে জমির দাম আসে ৫৫৩ কোটি টাকা আর ফলস-ফেব্রিকেটেড মূল্যের দলিলগুলো বাদ দিলে জমির দাম আসে ১৯৩ কোটি টাকা। এ জন্য তিনি সাক্ষাৎকারে দুইবার বার বলেছেন। চেয়ারম্যান বলেছেন, ওই বক্তব্য ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হিসেবে দেননি, ওই বক্তব্য ছিল একজন জমির মালিক এবং রিট পিটিশনার হিসেবে। এছাড়া মাই টিভি তার বক্তব্য আংশিকভাবে দেখিয়ে, পুরো বক্তব্য দেয়নি। তাই কারণ দর্শানোর দায় হতে তিনি অব্যাহতি চান। তার আবেদনের প্রেক্ষিতে আমরা তাকে সতর্ক করেছি।
উল্লেখ্য, চাঁদপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রস্তাবিত ভূমি অধিগ্রহণের ল²ীপুর মডেল ইউনিয়নের মেঘনাপাড়ের একটি এলাকা নির্ধারণ করা হয়। পরবর্তীতে ৬২ একর ভূমি অধিগ্রহণ প্রক্রিয়া শুরু করতে গিয়ে দেখা যায়- ওই ইউপির চেয়ারম্যান সেলিম খান, তার ছেলে-মেয়েসহ অন্যান্য জমি মালিকরা অস্বাভাবিক উচ্চমূল্যে দলিল তৈরি করেছেন। এর ফলে ওই জমি অধিগ্রহণে সরকারের ব্যয় বেড়ে দাঁড়ায় ৫৫৩ কোটি টাকা। জমির অস্বাভাবিক মূল্য দেখে জেলা প্রশাসক তদন্ত করলে বেরিয়ে আসে সরকারের কয়েকশ’ কোটি টাকা লোপাটের পরিকল্পনা।
ভূমি মন্ত্রণালয়ে পাঠানো জেলা প্রশাসক এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করেন, ওই মৌজায় জমির মূল্য অস্বাভাবিক বৃদ্ধি পাওয়ায় জেলার কানুনগো ও সার্ভেয়ারদের সমন্বয়ে ১৩ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেন জেলা প্রশাসক। ওই কমিটির তদন্ত প্রতিবেদন যাচাই করে দেখা যায়, অধিগ্রহণ প্রস্তাবিত ও পূর্বে অধিগ্রহণকৃত দাগগুলোর জমির হস্তান্তর মূল্য চরম অস্বাভাবিক।
এছাড়া এটি উদ্দেশ্যে প্রণোদিত হওয়ায় জনস্বার্থ ও সরকারি অর্থ সাশ্রয়ে অস্বাভাবিক উচ্চ মূল্যে সৃজন করা দলিল ছাড়া ১১৫ নম্বর ল²ীপুর মৌজার অন্যান্য সাফকবলা দলিল বিবেচনায় নিয়ে ১৯৩ কোটি ৯০ লাখ টাকা অধিগ্রহণের প্রাক্কলন প্রস্তুত করা হয়। আর উচ্চমূল্যের সেই দলিলগুলো বিবেচনায় নিয়ে প্রাক্কলন তৈরি করলে সরকারের ৩৫৯ কোটি ১৬ লাখ টাকা ক্ষতি হতো। এছাড়া মৌজামূল্য অস্বাভাবিক বৃদ্ধিতে সাধারণ জনগণ ভূমি হস্তান্তরসহ নানা বিষয়ে সমস্যার সম্মুখীন হতো।
এদিকে সরকারি অর্থ সাশ্রয়ের পক্ষে অবস্থান নেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকসহ একটি অংশ। সরকারি অর্থ লোপাট চেষ্টার পরিকল্পনা ফাঁস হওয়ার পর শুরু হয় ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা।
এরই মধ্যে চাঁদপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূমি অধিগ্রহণ সম্পর্কে অসত্য ও বিভ্রান্তিমূলক তথ্য উপস্থাপন করায় ল²ীপুর মডেল ইউপি চেয়ারম্যান সেলিম খানকে গত ১০ ফেব্রæয়ারি কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয় জেলা প্রশাসন।
ওই নোটিশে উল্লেখ করা হয়, চাঁদপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভূমি অধিগ্রহণের বিষয়ে কেবলমাত্র একবার প্রাক্কলন তৈরি করা হয়েছে এবং উক্ত প্রাক্কলনের বিরুদ্ধে আপনি মহামান্য হাইকোর্ট বিভাগে রিট পিটিশন দায়ের করেছেন। অথচ মাইটিভিতে বক্তব্য দেওয়ার সময় আপনি বলেন, ‘আমরা কোনও রেট দেই না, আগের রেটটাও ডিসি সাহেব করেছে; পরেরটাও ডিসি সাহেব করেছেন।’
চিঠিতে আরও বলা হয়, অধিগ্রহণ প্রস্তাবিত এলাকায় ভূমির মালিক ও রিট পিটিশনার হিসেবে জেলা প্রশাসক কর্তৃক একবার প্রাক্কলন তৈরি করা হয়েছে জেনেও আপনি টিভি চ্যানেলে আগের রেট, পরের রেট অর্থাৎ দুই রেট উল্লেখ করেছেন। যা অসত্য ও বিভ্রান্তিমূলক। এতে সরকারি কাজে বিঘœ সৃষ্টি হয়েছে। এ অবস্থায় কেন আপনার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না, তা চিঠি পাওয়ার তিন কার্যদিবসের মধ্যে জানাতে হবে। তা না হলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে নোটিশে উল্লেখ করা হয়।


এই বিভাগের আরও খবর